দাবি করে ইবিতে কোন কিছু আদায় সম্ভব নয়-প্রক্টর

ইবি প্রতিনিধি: দাবি করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন কিছু আদায় করা সম্ভব নয়। কোন ভাবেই যৌক্তিক বিষয়কে অযৌক্তিক বলে প্রমান করা যাবে না বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন ইবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান। আরবী ও আল-ফিকহ্ বিভাগের ভর্তি পরীক্ষায় বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার (৫সেপ্টেম্বর) শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি এ কথা বলেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের তিনি আরো বলেন, আমাদের দাবি মানতে হবে বলে পাশবার চিৎকার করলেও সেটা মানা অসম্ভব। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এখন সেই যায়গায় নেই এটা তোমাদের মাথায় রাখতে হবে।

তোমাদেরকে ভুলে গেলে চলবে না এই বিশ্ববিদ্যালয় এখন চলছে সমস্তকিছুকে ঊর্দ্ধে রেখে। যেটা সঠিক সিদ্ধান্ত সেটাই নেওয়া হচ্ছে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় আল-ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগ এবং আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগকে ধর্মতত্ত্ব অনুষদের সাথে একইসাথে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটি। যেখানে বিভাগ দুটির একটি আইন ও শরিয়াহ এবং অন্যটি কলা অনুষদভুক্ত। কমিটির ইউনিট বাছাইয়ের এমন সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক এবং বিতর্কিত দাবি করেছে বিভাগদ্বয়ের শিক্ষার্থীরা। বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে গত শনিবার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে স্ব-স্ব বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে তারা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা ১১ টায় আরবী বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভাগীয় সভাপতির কক্ষ তালাবদ্ধ করে রাখে। পরে বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান মানবিক ও সামাাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.নেছার উদ্দীন আহমেদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেন এবং প্রশাসনের সাথে সাক্ষাতের আশ্বাস দেন। পরে তাদের থেকে ভালো কোন আশ্বাস না পেয়ে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল উপ-উপাচার্যের সাথে দেখা করেন। তবে প্রতিনিধি দলের দাবি, তারা উপ-উপাচার্যের কাছ থেকে পজিটিভ কোন আশ্বাস পায়নি।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা কলা অনুষদের ডিন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে ঘটনাস্থলে প্রক্টর এসে শিক্ষার্থীদের ওই হুমকি দেন। এদিকে অন্য দিনের মতোও আইন ও শরিয়াহ্ অনুষদভুক্ত আল-ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। পরে বিভাগের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দাবির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করেন। বিভাগীয় সভাপতি তাদের শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করার অনুরোধ করলে তারা আন্দোলন স্থগিত করে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য) অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান বলেন, ভর্তি কমিটির একটি বড় ফোরামে এই সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। যে প্রক্রিয়ায় আইনের মধ্যদিয়ে এটি অনুমোদিত হয়েছে সেই প্রক্রিয়ায় অন্য কোন বিষয় ভর্তি কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহিত হবে। জানা যায়, গত ১৪ আগস্ট ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভায় আল-ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ ও আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা ধর্মতত্বের (‘এ’ ইউনিট) সাথে নেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব আনা হয়।

তবে আল-ফিকহ্ ও আরবী সাহিত্য কোন বিভাগেরই ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতিতে ধর্মতত্ত্বের সাথে মিল নেই। জানা যায়, আরবী সাহিত্যের শিক্ষার্থীরা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী সাহিত্যের মতই বাংলা, ইংরেজি এবং সাধারণজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হয়। আল-ফিকহ্ও বাংলা, ইংরেজি এবং সাধারণজ্ঞান বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়। অন্যদিকে ধর্মতত্ব অনুষদে কেবলমাত্র কোরআন, হাদিস ও ধর্মতত্ব বিষয়ক প্রশ্ন হয়। শুধু মাত্র ৫ নম্বরের বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণজ্ঞানের প্রশ্ন অন্তর্ভূক্ত রাখেন তারা।