দূর্নীতির অভিযোগ এনে এমপি শমভুকে আ’লীগের একাংশের অবাঞ্ছিত ঘোষণা

কে.এম.রিয়াজুল ইসলাম, বরগুনা জেলা প্রতিনিধিঃ সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম, মুক্তিযুদ্ধ, মাদক বাণিজ্য ও অপরাজনীতিসহ ২৪ দফা অভিযোগে বরগুনা-০১ আসনের সংসদ সদস্য ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের একাংশ।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বরগুনা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি মো. দেলোয়ার হোসেন, বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মো. হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মোতালেব মৃধা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু, বরগুনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শাহ মো. ওয়ালি উল্লাহ অলি, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য এস এম মশিউর রহমান শিহাব, বরগুনা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবুসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অধিকাংশ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু ও তার ছেলে সুনাম দেবনাথের দুর্নীতি, অনিয়ম মাদক বাণিজ্য ও অপরাজনীতির খতিয়ান তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শুনান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. জাহাঙ্গীর কবীর ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু। লিখিত বক্তব্যে তারা উল্লেখ করেন, চলতি বছর জানুয়ারী মাসে অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু এমপির দুর্নীতি অনিয়ম, ছেলে সুনামের মাদক বাণিজ্য ও অপরাজনীতির ২৪ দফা লিখিত অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি দেখা করেছেন নেতারা।

লিখিত বক্তব্যে তারা আরও উল্লেখ করেন, সুদীর্ঘ ২৭ বছরের অধিক সময় ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ২০ বছর সংসদ সদস্য থেকে নজির বিহীন দুর্নীতি অনিয়ম আর অপরাজনীতির মাধ্যমে অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু এমপি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পরেছেন তার পরিবার ও তার আত্মীয় স্বজন। নেতারা অভিযোগ করেন, তিনি (এমপি শমভু) কোন মুক্তিযোদ্ধা নয়। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন তিনি যুদ্ধে না গিয়ে পলায়নের ভুমিকায় অবতীর্ণ হন এবং নিজের নাম পরিবর্তন করেন। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর খুনি মোশতাকের অবৈধ সরকারের বরগুনা মহকুমার অন্যতম সংগঠক হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

এ ছাড়া নেতারা বলেন, এমপি শমভুর নেতৃত্ব এখন প্রশ্নবিদ্ধ। বরগুনার আপামর জনগণের কাছে তিনি এখন গণধিকৃক ব্যক্তি। এ জন্য দলের সুনাম পুনরুদ্ধার, শৃংখলা ফিরিয়ে আনা, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে আমরা তার (শমভু)র মত আপদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে আর দলীয় পদে থাকার ক্ষেত্রে নৈতিক ভাবে যোগ্য মনে করি না। নেতারা বলেন, দক্ষ, অভিজ্ঞ, যোগ্য ও প্রতিশ্রুতিশীল রাজনীতিবিদদের দূরে সরিয়ে রেখে অযোগ্য, অশিক্ষিত, ভুইফোড় ও অনুপ্রবেশকারীদের ক্ষমতায়ন করে কোটি কোটি টাকার উৎকোচ বাণিজ্য করে আসছেন তিনি। প্রাইমারী পিয়ন ও কনেষ্টবল নিয়োগ থেকে শুরু করে সর্বস্তরে ঘুষ বানিজ্য করে যাচ্ছেন তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কর্মিরা মনে করেন, এমপি শমভুর নেতৃত্বে এখন দলের জন্য নিরাপদ নয়। দলের প্রতি এমপি শমভুর চরম বৈরিতা, ক্ষমতার প্রতি সীমাহীন মোহ, দলকে ব্যবহার করে দুর্নীতি, লুণ্ঠন ও অনৈতিক কর্মকান্ডের ফলে আমরা তার নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানাই। পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগ, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ঐক্যবদ্ধ ভাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অ্যাডভোকেট ধীরৈন্দ্র দেবনাথ শমভু এমপিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু দেশের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।