নগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে নোমান চট্টগ্রাম থেকেই সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্দোলন সংগ্রামের সূতিগার বীর চট্টগ্রাম থেকেই স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হবে জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষণা শহীদ জিয়াউর রহমান এই চট্টগ্রাম থেকেই ঘোষণা করেছেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে। ৭৫ পরবর্তী সময়ে দেশের দূর্দিনে প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ স্লোগানে দেশের হাল ধরে দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা স্বাভৌমত্ব রক্ষা করেছেন বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে। বিএনপির ও শহীদ জিয়ার হাত ধরেই এদেশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পুনর্জন্ম হয়েছে।

কুচক্রী সেনা বাহিনী এই চট্টগ্রামে শহীদ জিয়াকে হত্যা করে গণতন্ত্র হত্যা করতে চেয়েছিল, কিন্তু বীর চট্টলাল আপামর জনসাধারণ এই চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে দেশনেত্রী উপাধি দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মাধ্যমে সেই হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। তাই বর্তমান স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে। মিথ্যা ও সাজানো মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে প্রেরণ করে এদেশের গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকারকে নির্বাসনে পাঠানোর ষড়যন্ত্র করছে। তা প্রতিহত করতে এই চট্টগ্রাম থেকেই এই অবৈধ অনির্বাচিত সরকারের পতন আন্দোলন শুরু হবে।

শনিবার বিকেলে নগরীর কাজীর দেউড়ি নুর আহমদ সড়কের দরীয় কার্যলয়ের সামনে বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক মেয়র বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এসএম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুল অালম ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক মেয়র মীর নাছির উদ্দিন বলেন, বিএনপিকে কখনো নিশ্চিহ্ন করা যাবে না, কারণ বিএনপি গণমানুষের দল। কর্মী ও জনগণের উপর ভরসা রেখেই বিএনপি বিগত চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেছে। তাই ষড়যন্ত্রই বিএনপি ও জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না। বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, সরকার জনগণের ভোটে ভয় পায় তাই মাত্র তিনমাস অাগে ইভিএমে নির্বাচন দিয়ে সরকার অাবারো ষড়যন্ত্র করছে, যে দেশে ইভিএম প্রস্তুত করেছে সেদেশ গুলোতে যেখানে ইভিএম প্রশ্নবিদ্ধ সেখানে কোটি টাকা খরচ করে ইভিএম নির্বাচন দেওয়া হলে তা বাংলার জনগণ মেনে নিবে না।

ইভিএমে কোন নির্বাচন এ দেশে হবে না। ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে চাকসুর সাবেক জিএস শামীম বলেন, তিনি অারেকটি ওয়ান ইলেভেনের গন্ধ পাচ্ছে, তার দলের সভানেত্রী বলেছিল তাদের আন্দোলনের ফসল ওয়ান ইলেভেন। গণঅভ্যুত্থান মাধ্যমে স্বৈরাচারী এ সরকারের পতন ঘটিয়ে বেগম জিয়াকে মুক্ত করে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফয়ান বলেন, বিএনপি অাগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী, লালদিঘী ময়দানের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ অাজকের সমাবেশে অংশ গ্রহন করেছে। প্রশাসন দিয়ে হামলা মামলা করে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি অাওয়ামীলীগ সরকার। অাজকের এ জনসমুদ্র প্রমাণ করে বিএনপি অাগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে। অাগামীতে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোন নির্বাচন এ দেশে হতে দেওয়া হবে না।

সভাপতির বক্তব্যে নগর বিএনপির সভাপতি ডা: শাহাদাত হোসেন বলেন, গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য চট্টগ্রাম থেকেই যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে, সরকার ৫জানুয়ারী ভোটারবিহীন এক তরফা নির্বাচন দিয়ে একবার ক্ষমতায় এসেছে। এবার ইভিএম দিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতি ভোট কারচুপি করার জন্য চার হাজার কোটি টাকা খরচ করে ইভিএম আনার ব্যার্থ চেষ্টা করছে। আর একশত অাসনে পরীক্ষামূলক ভোট গ্রহন করে সেই একশত আসনের ফলাফল ছিনিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।

বেগম জিয়া ও তারেক রহমানকে নতুন মামলা দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে ডা শাহাদাত বলেন, ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় জিয়া পরিবারকে জড়ানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অথচ এঘটনায় তারেক জিয়া জড়িত নয়। আওয়ামীলীগের নেতারা জড়িত, তা না হলে সেইদিন আওয়ামীলীগ মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়ে কেন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশ করছে, আর তা দুইদিন আগে মুফতি হান্নান কিভাবে জেনেছিল। এ থেকে বুঝা যায় আওয়ামীলীগের নেতারা গ্রেনেড হামলায় জড়িত।

সব মামলার বিচার হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ৯৭ সালে বেগম জিয়াকে চমেক হাসপাতালে ছাত্রলীগের গুন্ডারা হত্যা করতে চেয়েছে, তারও বিচার জনগন একদিন করবে। বেগম জিয়াকে নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছে, তাকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাই অামাদের শপথ নিতে হবে এ সরকারকে হটিয়ে গণতন্ত্রের সরকার প্রতিষ্টা করার। আর তা করার জন্য বেগম জিযাকে মুক্ত বরতে হবে এবং তারেক রহমানের সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে বলেও জানান তিনি।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অাবুল হাশেম বক্কর, সিনিয়র সহসভাপতি অাবু সুফিয়ান, এডভোকেট অাবদুস সাত্তার, এম এ অাজিজ, যুুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহসভাপতি অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, এস এম সাইফুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দীন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদুল আলম রাসেল, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মো. সাহেদ. ছাত্রদলের সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জমির উদ্দীন নাহিদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য শেখ রাসেল।