নবীগঞ্জে শিক্ষকের অবহেলায় সমাপনী টেস্ট পরীক্ষা থেকে বিরত হল আট জন ছাত্রী

মিজানুর রহমান সোহেল, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের টেকইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের অবহেলায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী মডেল টেস্ট পরীক্ষার ডি আর তালিকা এবং পরীক্ষা থেকে বিরত হয়েছে ৮জন শিক্ষার্থী। এমন অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীদের ভুক্তভোগী অভিভাবকগণ ও শিক্ষার্থীরা।

গতকাল সোমবার সরেজমিন পরিদর্শনে আলাপকালে অভিভাবকরা এ প্রতিনিধির কাছে এমন অভিযোগ করে বলেন, চলতি বছরের ১৮ নভেম্বর সারা দেশে একযোগে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে ২০ সেপ্টম্বর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী মডেল টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়। চলতি বছরের মে-জুন মাসের মাঝামাঝি সময় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের (ডিআর) তালিকা দেন টেকইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম।

সে সময় পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া ৩১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮ জন ছাত্রীর নাম বাদ দিয়ে ২৩ জনের তালিকা দেয়া হয়। বাদ পড়া ছাত্রীরা হলো- পানিউমদা তেতুলিয়া পাড়ার আব্দুস শহিদের মেয়ে সাবিনা আক্তার, সৈয়দুর রহমানের মেয়ে নাজমিন আক্তার, কাদির মিয়ার মেয়ে সালমা আক্তার, টেকইয়া এলাকার শাহনূর মিয়ার মেয়ে পান্না আক্তার, কালাম মিয়ার মেয়ে শারমিন আক্তার, মখলিছ মিয়ার মেয়ে রেজমিন আক্তার, আকবর আলীর মেয়ে জেসমিন আক্তার ও রেবিকা আক্তার। নাম বাদ দেয়ার বিষয়টি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের না জানিয়ে টেস্ট পরীক্ষার জন্য পরীক্ষা থেকে জড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষা ফি আদায় করেন শিক্ষক।

এই ফি কিছুদিন পর আবার ফেরত দিয়ে দেন। পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া সাবিনা আক্তারের পিতা আব্দুস শহিদ অভিযোগ করে বলেন, ‘সারা বছর আমার মেয়ে স্কুলে গেছে, পরীক্ষার জন্য ফিসও নেয়া অইছে কিন্তু এখন আমার মেয়েরে স্যারে পরীক্ষা দিতে দিছইন না। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকার। এ ব্যাপারে টেকইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন, ডিআর তালিকা থেকে কয়েকজনের নাম বাদ পড়ার বিষয়টি আমি শুনার পর পর প্রধান শিক্ষককে বলেছি তাদের পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য।

তিনি আমাকে তখন বলেছিলেন ব্যবস্থা নিবেন, কিন্তু এখন শুনছি কয়েকজন পরীক্ষা দিতে পারবে না। মোবাইল ফোনে টেকইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যে ক’জন শিক্ষার্থী বাদ পড়েছে তারা ১ম সাময়িক পরীক্ষায় ফেল করেছে। সেজন্য তাদের পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।

মিজানুর রহমান সোহেল