প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসছে চলনবিলে

মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, নাটোর প্রতিনিধি: সিংড়া উপজেলার পূর্ব-দক্ষিন অংশ জুড়ে চলনবিল। বাংলাদেশের বৃহত্তর বিল এটি। ৯টি উপজেলার ছোট বড় বিলের সমন্বয়ে গঠিত চলনবিল। প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগে হাজার হাজার মানুষ এখন ছুটে আসছেন চলনবিলে। দেশের অন্যান্য বিল থেকে এ বিলের পার্থক্য হলো এটি খর¯্রােতা। চলন নাম অনুসারেই এটির নামকরণ চলনবিল। পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ জেলার অংশজুড়ে এ বিলের বিস্তৃতি। বর্ষা মৌসুমে অসংখ্য খাল দিয়ে এ বিলে পানি প্রবেশ করে।

বর্ষাকালে জলরাশির বুকে নৌকায় পাল তুলে ঘুরতে মন কার না চায়। তাইতো অবসর পেলেই মানুষ ছুটে আসে এখানে। বিশেষ করে শুক্রবার দর্শনার্থীদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে। দুর দুড়ান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে। নাটোর,বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, রাজশাহী এমনকি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসছেন চলনবিলে। বর্ষায় এ সড়ক দিয়ে যেমন মাইক্রো, বাইক, অটোসহ ছোট যানবাহন চলাচল করে তেমনি রাস্তার উপর দিয়ে নৌকা চলে যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর।

তাছাড়া চলনবিল সিংড়ায় পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে গড়ে উঠেছে চলনবিল পর্যটন পার্ক। শিশুদের জন্য বিভিন্ন রাইড রয়েছে। রয়েছে ঝুলন্ত ব্রীজ। যেখান থেকে অপরুপ চলনবিলকে উপভোগ করা যায়। অপরদিকে চলনবিলের ইটালী ইউনিয়নে ঘাসি দেওয়ান রহ: এর মাজার রয়েছে। যেখানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাউলদের গানের আসর বসে। শুক্রবারে মানত করতে আসে শত শত ভক্ত। বর্তমানে আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে চলনবিল।

পরিবেশ উন্নয়ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ জানান, চলনবিল এখন প্রতিদিনই পর্যটকদের সমাগম বাড়ছে। দুর দুড়ান্ত থেকে পর্যটকদের আগমনে মুখরিত। পর্যটকদের জন্য বসার সুব্যবস্থা ও সিংড়া-বারুহাস-তাড়াশ সড়কের পাশে নৌকা, মাছ ও শাপলার প্রতিকৃতি বাস্তবায়ন করেছে জেলা পরিষদ। যা নজর কাঁড়ছে দর্শনার্থীদের।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম ভোলা জানান, এক সময় চলনবিল এলাকাটি ছিল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, অবহেলিত। বর্ষা মৌসুমে এ বিলের মনোরম পরিবেশ দর্শকদের বেশি আকৃষ্ট করে। এ মৌসুমে চলনবিলের সুবিশাল জলরাশি, উত্তাল তরঙ্গ, পাল তোলা নৌকা দেখতে উৎসুক জনতা ছুটে আসেন।

সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, চলনবিলে স্বাচ্ছন্দে বেড়ানোর জন্য নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। সাদা পোশাকের ফোর্সসহ পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য টহলে রাখা হয়েছে। শুক্রবার দর্শনার্থী বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বিপুল কুমার জানান, দেশের ঐতিহ্যবাহী চলনবিলে পর্যটন শিল্প বিকাশে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। চলনবিলের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই। উপজেলার একটি অংশ এ বিলের সৌন্দর্য উপভোগের উপযুক্ত স্থান হিসেবে দর্শনার্থীদের কাছে আগ্রহ বেড়েছে।