বাঘাবাড়ি-বেড়া মুজিব বাঁধ হুমকির মুখে ২ লাখ মানুষের যাতায়াতে দূর্ভোগ

ফারুক হাসান কাহার, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি রামখারুয়া গ্রাম থেকে পাবনার বেড়া উপজেলার আমাইকোলা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার মুজিববাঁধের সংস্কার কাজ দীর্ঘ ৩৭ বছরের মধ্যেও করা হয়নি। ফলে বাঁধটির দুপাশের মাটি ও সিসি ব্লক ধসে বহুস্থানে বড় বড় খানা খন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে, দুই হাজার সালে বাঁধটিতে শেষ বারের মতো সংস্কার কাজ করে এর উপর পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। এতে বাঁধটির স্থায়ীত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি এ এলাকার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ ও উন্নতর হয়।

এরপর দীর্ঘ ১৭ বছর পার হয়ে গেলেও এ সড়কটি সংস্কার করা হয়নি। ফলে সড়কটির অধিকাংশ স্থানে পিচ, খোয়া ও পাথর উঠে গিয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর এবং পাবনা জেলার বেড়া ও সাথিয়া উপজেলার ১৪টি গ্রামের কমপক্ষে ২লাখ মানুষের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমাইকোলা গ্রামের ৭৫ উর্ধ্ব বয়োবৃদ্ধ আজমত আলী খাঁ জানান, পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের (আইআরডি) আওতায় ১৯৮০ সালে এ বাঁধটি নির্মাণ করে মুজিব বাঁধ নির্মাণ করা হয়।

এ বাঁধ নির্মাণের ফলে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার বেড়া, সাথিয়া ও ফরিদপুর উপজেলার ৪৫ হাজার হেক্টর এক বা দুই ফসলী জমি তিন ফসলী জমিতে পরিণত হয়। ফলে এ এলাকা হতদরিদ্র কৃষকেরা বছরে তিন ফসল আবাদ করে স্বচ্ছল হয়ে ওঠে।এতে এলাকার মানুষের ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে। এরপর অতি বন্যা ও বৃষ্টিপাতের ফলে বাঁধটি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়লে দুই হাজার সালে তা সংস্কার করে তার উপরে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। এরপর আর এ বাঁধটি সংস্কার করা হয়নি।

রূপবাটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ সড়কের এমন বেহাল অবস্থার কারণে হাসপাতালে রোগীরা যেতে পারে না। ফলে তারা সু-চিকিৎসা থেকে প্রায়ই বঞ্চিত হচ্ছে। চয়ড়া গ্রামের মুদি দোকানদার নান্নু মিয়া জানান, এ বাঁধটি সংষ্কার কাজ না হওয়ায় প্রতিদিন এ সড়কে যানবাহন চলাচলে দূর্ঘটনা ঘটছে। এতে অনেক ব্যাক্তির প্রাণ হারিয়েছে। বহু সংখ্যক মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এ ব্যাপারে রূপবাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সিকদার বলেন, দুগ্ধ ও শিল্প প্রধান এ এলাকার মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহনের একমাত্র ভরসা এই বাঁধ ও সড়ক।

এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত লিটার দুধ ও অন্যান্য মালামাল পরিবহন করা হয়। সড়কটি এ এলাকার মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন হওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বাধ ও সড়কটির সংস্কার প্রয়োজন। এ ব্যাপারে বেড়া পানি উন্নয়ন নির্বাহি প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল হামিদ জানান, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নাটোর জেলার উপজেলাগুলো নিয়ে পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প গঠিত। এ প্রকল্পের আওতাভুক্ত আবাদি ও কৃষি জমির ফসল রক্ষার্থে ১৯৮০ সালে এ বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় বাঁধটি সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। এ বছর মাটির কাজ করার জন্য ৫০ লাখ টাকার একটি বরাদ্দ পাওয়া গেছে। অচিরেই এ মাটির কাজ শুরু করা হবে। আর শাহজাদপুর এলজিইডিকে রাস্তা পাকাকরণের জন্য বলা হয়েছে। মাটির কাজ শেষ হলে তারা পাকা করে দিবে বলে জানিয়েছে।