নওগাঁয় বাক প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ – ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁয় বাক প্রতিবন্ধী চতুর্থ শ্রেনীর এক কিশোরীকে (১১) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার গেছে। এমন ঘটনায় পুলিশ কিশোরীকে উদ্ধার করে নওগাঁ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করে। বর্তমানে কিশোরীর অবস্থা শঙ্কামুক্ত হলেও সুষ্ঠু বিচার দাবী করেছেন কিশোরীর স্বজনরা। ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামী পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ সদর উপজেলার মধ্য দূর্গাপুর গ্রামে বৃহস্পতিবার সকালে বাক প্রতিবন্ধী এক কিশোরী তার প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় বাড়ীতে কেউ না থাকার সুযোগে অপর প্রতিবেশী দুই সন্তানের জনক পঙ্কজ কুমার (৩৯) নামে এক ব্যক্তি জোরপূবর্ক কিশোরীর মুখ চেপে ধরে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। কিশোরী বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে প্রকাশ পায়।

এরপর পৌর সভার স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ড কমিশনার ও পৌর আওয়ামীলীগের সহসভাপতি একেএম নজমুল হক মন্টুসহ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বিষয়টি ধামাচাপা দিতে কিশোরীর পরিবারকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করতে উঠেপড়ে লাগেন। স্থানীয়রা জানান, ওই কিশোরীকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করাতে বাধা দেয়া এবং থানাতে মামলা দায়ের না করাতে ব্যাপক চাপ দেন ওই প্রভাবশালী মহল। বিষয়টি থানা পুলিশ জানতে পেরে রাত ৮টার দিকে কিশোরীকে উদ্ধার করে নওগাঁ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করে দেয়। ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবী করেছেন কিশোরীর স্বজনরা ও স্থানীয়রা।

ওই কিশোরী মা ও স্বজনরা জানিয়েছেন, এরপর থেকে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। নওগাঁ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: আরিফুল কবির জানান, নির্যাতনের শিকার বাক প্রতিবন্ধী এ কিশোরী বর্তমানে শঙ্কামুক্ত রয়েছেন। ওই কিশোরীর বাবা জানান, দ্রুত ওই ধর্ষকের শাস্তির বিচার দাবি জানানো হয়েছে। নওগাঁ পৌর কমিশনার একেএম নজমুল হক মন্টুর সাথে বলা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শহীদ হাসান সিদ্দিকী জানান, আইনি দূর্বলতার কারণে দিন দিন বাড়ছে নারী ও শিশু নির্যাতনের মতো এমন ঘটনা।

নারী ও শিশু নির্যাতনের সঠিক বিচার করা হলে আগামিতে এই ধরনের কর্মকান্ডের কমে আসবে বলে মনে করছেন তিনি। নওগাঁ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই জানান, ঘটনাটি জানতে পেরে ওই কিশোরিকে রাতেই উদ্ধার করে নওগাঁ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার ওই কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওসি আরো জানান, কিশোরীর বাবা থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনারপর থেকে অভিযুক্ত পঙ্কজ পলাতক রয়েছে। তাকে দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।