নড়াইল-২ আসনে আ’লীগ নেতা হিমুর মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা

ফরহাদ খান, নড়াইলঃ নড়াইল-২ আসনে দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য শেখ আমিনুর রহমান হিমুসহ দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা। এ লক্ষ্যে নড়াইলে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তৃণমূলের জনপ্রিয় মুখ আমিনুর রহমান হিমু ব্যক্তিগত ভাবে উন্নয়নের পাশাপাশি ‘জনপ্রতিনিধি’ হয়েও জেলার সার্বিক উন্নয়ন করতে চান। ইতোমধ্যে ব্যক্তিগত ভাবে নড়াইলে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন হিমু। স্বপ্ন দেখেন উন্নত ও সমৃদ্ধশালী নড়াইল গড়ে তোলার। সেই লক্ষ্যে শিক্ষা, মানবসেবা, প্রতিবন্ধীদের উন্নয়ন, ‘ক্লিন নড়াইল, গ্রিন নড়াইল’, স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

ভবিষ্যতে নড়াইলে একটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা আছে তার। এদিকে, ব্যক্তিগত ভাবে উন্নয়নের পাশাপাশি ‘জনপ্রতিনিধি’ হয়েও উন্নয়ন করতে চান হিমু। এ লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় মনোনয়ন পেতে অবিচল রয়েছেন তিনি। মনোনয়ন পেলে বিজয়ী হবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। হিমু নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময়, গণসংযোগ এবং দলীয় কর্মসূচীগুলো পালন করে যাচ্ছেন। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের খোঁজখবর রাখার পাশাপশি কেন্দ্রীয় ভাবেও ভূমিকা রাখছেন তিনি। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে এলাকায় সুনাম রয়েছে হিমুর।

এসব উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডকে আরো গতিশীল করতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমিনুর রহমান হিমুকে নড়াইল-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় দলীয় নেতাকর্মীসহ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন পেশার মানুষ। নড়াইলবাসীসহ নেতাকমী ও সমর্থকেরা ইতোমধ্যে আ’লীগ নেতা হিমুর পোস্টার, তোরণ, ব্যানার, লিফলেট ছাড়াও বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। শিল্পপতি, শিক্ষানুরাগী এবং আ’লীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য আমিনুর রহমান হিমু বলেন, নড়াইলের উন্নয়নে ইতোপূর্বে কে কী করেছেন, সেই দোষারোপ করব না। তবে নড়াইল-২ আসন থেকে জনপ্রতিনিধি হওয়ার সুযোগ পেলে জেলার সার্বিক উন্নয়ন করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে দলীয় মনোনয়ন দেন, জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করেন, তাহলে ‘নড়াইলের উন্নয়ন’ নিয়ে আর ভাবতে হবে না-একথা দৃঢ়কণ্ঠে বলতে পারি। এক্ষেত্রে ‘নড়াইল-২ আসন হবে উন্নয়নের রোল মডেল’, উন্নয়নের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

দুই বছরের মধ্যে নড়াইলের দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হবে। আমার স্বপ্ন এলাকার উন্নয়ন। আমি অতিথির পাখির মতো দু’দিনের জন্য আসিনি। আমি উন্নয়ন আর মানুষের কাছাকাছি সবসময় থাকতে চাই। কারণ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, এক্ষেত্রে তার মন-মানসিকতার মতো আরো মানুষ প্রয়োজন। যাতে করে সেই এলাকার বেশি উন্নয়ন হয়। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের সেই অনুপ্রেরণা থেকে ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতিতে এসেছি। হিমু আরো বলেন, মানবসেবা পরম ধর্ম। মানবসেবা না করলে সমাজ এগোবে কীভাবে। কারণ, আল্লাহ একজনকে দেন, দশজন উপকৃত হয়। আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন, সেই সুযোগ ও সম্ভাবনা কাজে লাগানো উচিত। স্বচ্ছল মানুষগুলো মানবসেবা না করলে অন্যরা উপকৃত হবে কীভাবে। মানবসেবা আমার কাছে সম্পদ মনে হয়। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন মানবসেবা করে যাবো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আ’লীগ নেতা আমিনুর রহমান হিমু ইতোমধ্যে ব্যক্তিগত ভাবে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কাজ করেছেন। শিক্ষার মান উন্নয়নে নড়াইলের আমাদা আদর্শ কলেজে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ভবন’ নির্মাণ করে দিয়েছেন। এছাড়া সদরের দারিয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে তিন লাখ টাকার অনুদান, লোহাগড়ার ঝামারভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বালি ভরাট করে জলাবদ্ধতা দুরকরণ এবং ২০১৭ সালের ৫ আগস্ট লোহাগড়ায় আরএল পাশা সরকারি বিদ্যালয় চত্বরে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীকে সম্মাননা পদক ও আর্থিক অনুদান দিয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে নড়াইল ও লোহাগড়ার দুই শতাধিক দরিদ্র এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ফরমপূরণে আর্থিক সহযোগিতা এবং লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে এক লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন।

এদিকে, সদরের চরশালিখায় প্রস্তাবিত ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মসজিদ ও মাদরাসা’ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন তিনি। গত ৯ অক্টোবর অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী তানহা ইসলামের হাতে অনার্স প্রথমবর্ষে ভর্তি ফি চার হাজার ৫১০ টাকাসহ মোট পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছেন শিক্ষানুরাগী হিমু। শিক্ষা উপ-বৃত্তির টাকা জমিয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পারলেও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে অনার্সে ভর্তি হতে পারছিলেন নড়াইলের লোহাগড়ার মেয়ে তানহা।

এদিকে, ক্লিন নড়াইল, গ্রিন নড়াইল’ গড়ার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে জেলা প্রশাসনকে বৃক্ষরোপনে তিন লাখ টাকার সহায়তা দিয়েছেন হিমু। এছাড়া ঝামারঘোপ সার্বজনীন কালিমন্দির নির্মাণ কাজে প্রায় এক লাখ টাকা প্রদানসহ গত ১০ জানুয়ারি নড়াইল সদরের মুলিয়ায় একটি মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তরসহ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মসজিদ, মাদরাসা, ঈদগাহসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছেন। অন্যদিকে, গত শীত মওসুমে লোহাগড়ার মুক্তিযোদ্ধাসহ তাদের পরিবার-পরিজনের মাঝে এক হাজার ৩৫০ কম্বল উপহারসহ নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায় শীর্তাত অসহায় মানুষের মাঝে সাড়ে ছয় হাজার কম্বল প্রদান করেন।

গত ৫ মে কালবৈশাখী ঝড়ে নড়াইল সদরের মুলিয়া ইউনিয়নের বনগ্রামের শৈলেন বিশ্বাসের টিনের ঘরটি লন্ডভন্ড হলে গৃহহীন পরিবারকে সাতদিনের মধ্যে ঘর নির্মাণ করে দেন হিমু। ২ মার্চ আ’লীগের যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কবর জিয়ারতসহ দোয়া এবং মোনাজাত করেন শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক শেখ আমিনুর রহমান হিমুসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ। ২৭ মার্চ নড়াইল মর্ডাণ সিটি লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি মনোনীত করা হয় আমিনুর রহমান হিমুকে। গত ১৮ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান দিয়েছেন শিল্পপতি আমিনুর রহমান হিমু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে অনুদানের এ চেক তুলে দেন তিনি। নড়াইল প্রেসক্লাবের দাতাসদস্যও হিমু।

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ঈশানগাতি গ্রামের সন্তান হিমু ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী হিসেবে জেলায় ব্যাপক পরিচিত। ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত ‘সুরাইয়া গ্রুপ’ এর চেয়ারম্যান ও এমডি। এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন বহু মানুষের কর্মসংস্থান। ব্যবসায়িক কাজে দেশে-বিদেশে ব্যস্ত থাকার পাশাপাশি রাজনীতি ও মাতৃভূমির টানে ছুটে আসেন নড়াইলের মাটি ও মানুষের কাছে।