বারোমাসি আম চাষে সফলতা পেয়েছেন জীবননগরের আবুল কাশেম

তুষার আহমেদ, চুয়াডাঙ্গাঃ থাই বারোমাসি আমচাষে সফল হয়েছেন চুুুুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার নার্সারী মালিক আবুল কাশেম। গাছে বারো মাস ধরে এই আম। এই জন্য এই জাতের নাম থাই বারোমাসি আম। আবুল কাশেম ২২ বিঘা বাগান হতে এবার অসময়ে প্রায় ১৬লক্ষ টাকার আম বিক্রি করেছেন। বাগানের গাছে এখন ভরপুর আম রয়েছে। আগামীতে আম বিক্রি করে অধিক লাভের আশা করছেন আবুল কাশেম।

আবুশ কাশেম বিডি২৪রিপোর্ট কে জানান, তার এক নিকট আত্মীয় ৬ বছর পূর্বে থাইল্যান্ডে যান ব্যবসায়ীক সফরে। সেখানে তাদেরকে একটি আম বাগান পরিদর্শনে নেওয়া হয় এবং ঐ বাগান হতে পাকা আম পেড়ে খেতে দেওয়া হয়। সুমিষ্ট ঐ আম খেয়ে ভাল লাগে সার-কীটনাশক ব্যবসায়ী নূর ইসলামের। তিনি বাগান হতে গাছের একটি ডাল ভেঙ্গে ব্যাগে নেন। দেশে ফিরে ওই ডালটি নার্সারী মালিক আবুল কাশেমকে দেন চারা তৈরীর চেষ্টা করার জন্য। সেই ডাল থেকে চারা তৈরী করে সে সময় সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন আবুল কাশেম।

পরের বছর ঐ গাছে ৮-১০টি আম ধরে। একে একে তিন বার আম ধরে গাছটিতে। পাকা আম খেতে স্বাদ ও গন্ধে অত্যন্ত সুমিষ্ট হওয়ায় কাশেম উদ্বুদ্ধ হয়ে ওই চারা থেকে আবার কলম চারা তৈরী শুরু করেন। তিনি জানান, কলম চারা দিয়ে অবুল কাশেম উপজেলার বাঁকা গ্রামের মাঠে ২২বিঘা আমবাগান গড়ে তুলেছেন। বর্তমানে ২ হাজার ২০০ টির মতো গাছ রয়েছে তার বাগানে। বাগানের বয়স এখন ৪ বছর। তার নার্সারীতে বিক্রির জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত থাই বারোমাসি আমের চারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগানের গাছের বোটায় থোকাই থোকাই আম ঝুলছে। কোনটাতে পাক ধরেছে, আবার কোনটা কাঁচা। কোন গাছে মুকুল ধরেছে, আবার কোনটাতে গুটি। বছরে তিন বার ফল দিচ্ছে এ গাছ। প্রতিটি গাছ থেকে বছরে ৩বারে গড়ে ৪০কেজির মতো আম পাওয়া যাচ্ছে। অসময়ে উৎপাদিত হওয়ায় এ আমের দামও চড়া। থাই বরোমাসি আম পাকলে হলুদ বর্ণ ধারণ করে। দেখতে আকারে অনেকটা আম-রুপালি আমের মত। স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয়। আঁটি আকারে অত্যন্ত ছোট ও পাতলা।

আবুল কাশেম বিডি২৪রিপোর্ট কে জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগ হতে তাকে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে গত ৮ অক্টোবর চ্যানেল আইয়ের কৃষি বিষয়ক সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ তার বাগানটি পরিদর্শন করে ডকুমেন্টারী তৈরী করেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, জাতটি আমাদের দেশে নতুন। আবুল কাশেমই এটি তৈরী করেছেন। এটি দ্রুত সম্প্রসারণযোগ্য একটি জাত। এ আম খেতে অত্যন্ত সুমিষ্ট। ঘ্রাণও সুন্দর। আমের খোলার নিচের অংশ খুব শক্ত হওয়ায় ঘরে অনেক দিন রেখে খাওয়া যায়। এ আম চাষে কৃষক লাভবান হবেন বলে তিনি অশা করছেন।