ভুয়া মালিক সাজিয়ে রেলওয়ের ভূমি অধিগ্রহনের অর্ধকোটি টাকা আত্মসাত

হেমন্ত বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জে ভুয়া ওয়ারেশন সনদ ও জাল কাগজপত্র তৈরী করে জমির নামপত্তনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এল, এ শাখা থেকে রেলওয়ে কর্তৃক ভ’মি অধিগ্রহনের প্রায় অর্ধকোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছে একটি জালিয়াতি চক্র। সদর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত ভুয়া ওয়ারেশন সনদ দিয়ে ভুমি অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজসে জালজালিয়াতি চক্রটি দু’দফায় দু’টি চেকের মাধ্যমে ওই টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করে।

এদিকে, রেলওয়ে কর্তৃক অধিগ্রহনকৃত আরো ৪২ শতাংশ ভুমির ক্ষতিপূরন বাবদ ১১/১২-১৩ নং এল, এ, কেস মূলে দু’টি চেকের মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকা জালজালিয়াতি চক্রটি উত্তোলনের চেষ্টা করে। বিষয়টি অবগত হয়ে ভুমির প্রকৃত মালিক মৃত. মোঃ গোলাম মোস্তাফা চৌধুরীর পুত্র সাবু চৌধুরী এল, এ শাখায় আবেদন দাখিলের মাধ্যমে ক্ষতিপূরনের বাকী টাকা প্রদানে আপত্তি করেন।

অনুসন্ধানে জানাযায়, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৮৭ নম্বর কারালগাতী মৌজার আরএস ৭৭ নং খতিয়ানের ২.৫০ একর ভূমির প্রকুৃত মালিক অমরেন্দ্রনাথ রায় গং ও বিপীন বিহারী বিশ্বাস। যাদের নিকট থেকে মোঃ গোলাম মোস্তফা চৌধুরী ১২২২/১৯৪৭ নং খাজনা মোকাদ্দমার ডিক্রী মূলে সত্ত্ববান হন। কিন্তু জালিয়াত চক্রটি বিপীন বিহারী বিশ্বাসের ভুয়া উত্তরাধিকারী দাবী করে দূর্গাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আকবার হোসেনকে দিয়ে ভুয়া ওয়ারেশন সনদপত্র তৈরী করে।

পরে ওই ভুয়া ওয়ারেশন সনদপত্র দিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের যোগসাজসে গোপালগঞ্জ ভূমি অফিস থেকে বাদল বিশ্বাসের নামে ভ’মা নাম পত্তন করে। অতঃপর ওইসব জাল কাগজপত্র গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহন (এলএ) শাখায় জমা দিয়ে রেলওয়ে কর্তৃক ভূমি অধিগ্রহনকৃত ৪৫ শতাংশ ভূমির ক্ষতিপূরনের টাকা উত্তোলন করে জালজালিয়াতি চক্রটি ভাগবাটোয়ারা করে নেয়।

দূর্গপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের সাথে এ ব্যপারে কথা বললে তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি উত্তারাধিারী যাচাই না করে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত ওয়ারেশন সনদের উপর ভিত্তি করে বাদল বিশ্বাসের নামে নামপত্তনের প্রস্তাব করি।

ইউপি চেয়ারম্যান আকবর হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওয়ারেশন সনদে যে স্বাক্ষর দেয়া হয়েছে তা আমার স্বাক্ষর বলে মনে হচ্ছেনা। ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলতে পারবেন কে বা কাহারা আমার স্বাক্ষর জাল করেছে।
সদর উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহকারী ও যাচাইকারক শিশির কুমার বিশ্বাস বলেন, উক্ত বিষয়টি আমার যাচাই করার দায়িত্ব ছিল। কিন্তু আমি সংশ্লিষ্ট ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কথানুযায়ি আমি ফাইল প্রস্তুত করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর নাম পত্তনের জন্য প্রেরন করি।