মামলা প্রত্যাহারে খুনের হুমকি

জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলানো হয়েছে এমন ঘটনায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্বামী সতিনসহ পাঁচজনকে আসামী করা মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে মামলার বাদীকে মামলা প্রত্যাহারের জর‌্য দেয়া হচ্ছে প্রানাশের হুমকি। এ ঘটনায় কলাপাড়া থানায় জিডি করেছেন মামলার বাদী ওই গৃহবধূর বোন কাজল।

কাজল জানান, জানার পরে মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে বলা হয় স্ট্রোকে মারা গেছে ফাতেমা। পাষন্ড ৫৮ বছর বয়সী মোসলেম সিকদার সম্পর্কে চাচা হয়েও কিশোরী বয়সে ফাতেমাকে দ্বিতীয় বিয়েতে বাধ্য করে। এরপরেও মোসলেমের কুকীর্তির অন্ত ছিলনা। এসব প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে ২০ অক্টোবর ফাতেমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পুলিশ বাড়িতে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।

এ ঘটনার বিচার চেয়ে ফাতেমার বোন কাজল কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ২৩ অক্টোবর একটি মামলা করেন। যেখানে ফাতেমার স্বামী মোসলেম সিকদার, সতিনের ছেলে আবু সায়েক সিকদার, সতিন হাজেরা বেগম, মোসলেমের বোন রওশনারা বেগমসহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে গৃহবধূ ফাতেমা হত্যা মামলা প্রত্যাহার করতে বাদীকে দেয়া হচ্ছে খুনের হুমকি। ফাতেমার বোন মামলার বাদী মোসাম্ম কাজল এ ঘটনায় পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে কলাপাড়া থানায় একটি জিডি করেছেন।

মামলায় বলা হয়েছে, একাধিক মামলার আসামি মোসলেম সিকদার ফাতেমাকে নাবালক থাকা অবস্থায় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বিয়ে করেন। এরপর পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকত। ঝগড়া ছিল নিত্য ঘটনা। আসামিরা পরিকল্পিতভাবে ফাতেমাকে (২৫) হত্যা করে। ফাতেমার আট বছর বয়সী শিশু সন্তান ফাহিম এখন মা হারা, নির্বাক হয়ে গেছে। শুধু এদিক-ওদিক ফিরে খুঁজে বেড়ায় মাকে। ফাতেমার বাবা আব্দুর রব সিকদারও অসহায়ের মতো চোখের পানি ঝরাচ্ছেন। বর্তমানে ফাতেমার হত্যার বিচারে মামলা করে মোসলেম সিকদার গংদের অব্যাহত হুমকিতে পরিবারের সবাই নিরাপত্তাহীন হয়ে আছেন।

মামলার বাদির আইনজীবী নাথুরাম ভৌমিক জানান, বিজ্ঞ আদালত কলাপাড়া থানার ওসিকে এফআইআর গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। কলাপাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, ফাতেমার গোটা পরিবারের নিরাপত্তার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনামতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আসামিরা পলাতক রয়েছে। গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।