মেঘনা- তেঁতুলিয়ায় ইলিশ ধরতে নেমেছেন জেলেরা

অাকতারুজ্জামান সুজন, ভোলা প্রতিনিধিঃ ২২ দিন মা’ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা শেষে রোববার রাত ১২ টার পর থেকে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ ধরতে নামছে জেলেরা। ইতোমধ্যে ভোলা জেলার ৭ উপজেলার ১ লক্ষ ৫১ হাজার ২৫০ জন নিবন্ধিত জেলে জাল ও নৌকা নিয়ে নদীতে মাছ ধরছে।

রোববার ভোলা ৭ টি উপজেলার বিভিন্ন জেলে পল্লী ও মাছঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে ইলিশ আহরণের জন্য জাল প্রস্তুত করতে ব্যস্ত রয়েছেন জেলেরা। আবার অনেকে তাদের নৌকাগুলো এ কয়দিনে ঠিকঠাক করে রেখেছেন।

ইলিশ প্রজনন রক্ষায় চলতি মাসের ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মওজুদ ও পরিবহন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে সরকার। মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়ার জন্য ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকাকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার।

সেই আলোকে এখানে এ ২২ দিন সকল প্রকার মাছ আহরন নিষিদ্ধ করা হয়। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভোলা জেলা প্রশাসন ও মস্য বিভাগ অভয়াশ্রম চলাকালে এসব নদীতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে নদীতে ২৪ ঘন্টা কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের টিমের অভিযান চালিয়েছে। যারা সরকারি নির্দেশ অমান্য করে নদীতে নেমেছে তারা বিভিন্ন ধরনের শাস্তির সম্মুখীন হয়েছেন।

জেলা মস্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, গত ২২ দিনে ভোলার ৭ উপজেলার ৪১৮ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ২৩০ জেলের কাছ থেকে ৬ লাখ ৯১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া ৩ মেট্রিক টন ইলিশ জব্দ করাসহ ৫ লাখ ৯১ হাজার মিটার জাল আটক করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলার ৮৮ হাজার ১১১ জেলেকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে।

ভোলা জেলা ক্ষুদ্র মস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এরশাদ জানিয়েছেন, ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা ফলে নদীতে ইলিশ মাঝের সংখ্যা বাড়বে, এতে করে জেলেরাও মাছ বেশি পাবে। তিনি অারো বলেন, জেলেদের মাঝে প্রণোদনার চাল সঠিক সময়ে বিতরণ এবং নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময় বেসরকারি সংস্থাগুলোর ঋণের কিস্তি সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা সম্ভব হলে এধরনের অভিযান শতভাগ সফল হবে।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সিনিয়র মস্য কর্মকর্তা মো.আসাদুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ মা ইলিশ অবাধে ডিম ছাড়তে পেরেছে। এতে এবছর জেলার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ সম্ভব হবে।