রাবিতে শিবির সন্দেহে ৪ শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিলো ছাত্রলীগ

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিবির সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগ। এদের মধ্যে একজনকে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। এদিকে এ ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে দুটি ককটেল বিষ্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের সামনে থেকে শিবির সন্দেহে ১৪ শিক্ষার্থীকে ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে নিয়ে এসে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে ছাত্রলীগ বলছে, এদের মধ্যে চারজন শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত এমন প্রমাণ পাওয়ায় তাদের পুলিশে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশে দেওয়া ওই চার শিক্ষার্থী হলেন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী লিটন, দ্বিতীয় বর্ষের মোহায়মিন, আরবি দ্বিতীয় বর্ষের শারুখ, সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাসিম। বাকীদের শিবির সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ছাত্রলীগ। প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা জানায়, সন্ধ্যায় প্যারিস রোডে একসঙ্গে হাটাহাটি করছিল ওই শিক্ষার্থীরা। হাটাহাটির একপর্যায়ে তারা তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের পাশের ওই রাস্তায় এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের থামতে বলে। এতে তারা দৌঁড়ে এদিক-সেদিক পালানো শুরু করে। পরে তারা ফজিলাতুন্নেছা হলের সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গিয়ে তাদের আটক করে। প্রথমে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে তারপর বঙ্গবন্ধু হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে বঙ্গবন্ধু হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় মতিহার হল ও মমতাজ উদ্দিন কলাভবনের সামনে দুইটি ককটেল বিষ্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এরপর ক্যাম্পোসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ককটেল বিষ্ফোরণের পরপরই শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পোসে মিছিল বের করে।ছাত্রলীগের রাবি শাখার সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, সন্ধ্যায় আমরা খবর পেলাম ছাত্র শিবিরের একটি দল ক্যাম্পাসে মিছিল করছে। সংবাদটি শুনে তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনের রাস্তায় তাদের থামতে বলা হয়। কিন্তু এদিক-সেদিক দৌঁড়ে তারা অনেকে পালিয়ে যায়। পরে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা হলের সামনে গিয়ে তাদের ১৪ জনকে আটক করতে সক্ষম হই। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চারজন শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ পেয়ে তাদেরকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। বাকীদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ককটেল বিষ্ফোরণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শিবিরের কয়েকজনকে ধরেছি। এসময় দুইটি ককটেল বিষ্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করতে তারাই ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফ উজ জামান বলেন, হলে শিবির সন্দেহে শিক্ষর্থীদের আটক করেছিল ছাত্রলীগ। আমি এসে যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে হল থেকে বের করে দিয়েছি। তবে বাইরের শিক্ষার্থীদের এই হলে ঢোকানা আমার পছন্দ হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুফর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি জানলে প্রশাসনকে জানাই। ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীদের আটক করেছে ছাত্রলীগ। এরপর তাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে নিয়ে যায় তারা। এরপর আমি নিজে ঘটনাস্থলে গেলে তারা আটককৃতদের পুলেশে সোপর্দ করে। নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদা হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই চার শিক্ষার্থীকে আমাদের হাতে তুলে দেয়। পরে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।