ইউনিলিভার বিজমেসস্ট্রোজ – ২০১৮ চ্যাম্পিয়ন বিইউপি

ইউনিলিভারের ফ্ল্যাগশিপ বিজনেস প্রতিযোগিতা-বিজমেসস্ট্রেজ-২০১৮ এর চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)। বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) ঢাকার হোটেল রেডিসনে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে দলটি বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার্স আপ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস স্টাডিজ (এফবিএস) এবং দ্বিতীয় রানার্স আপ হয় একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ)

বাস্তব ও উদ্ভাবনী শিক্ষার সুযোগ দিতে এ বছর নবমবারের মতো আয়োজিত বিজমেসস্ট্রোজে ৮৩টি দল অংশগ্রহণ করে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতায় তিনটি রাউন্ডে কঠিন লড়াইয়ের মাধ্যমে চুড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেয় দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঁচটি দল। এদের নিয়ে ১ নভেম্বর হোটেল র‌্যাডিসনে গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন টিম-২০১৯ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লিগ (এফএলএল)-এ অংশগ্রহণ করবে। এর আগে তারা ইউনিলিভারের ম্যানেজমেন্ট ট্রেনি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। ইউএনডিপি’র সহযোগিতায় ইউনিলিভার বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ইউনিলিভার সাসটেইনেবল লিভিং প্লান (ইউএসএলপি), জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং ইউনিলিভারের কেন্দ্রীয় থিম ‘ওয়াশ’ (ওয়াটার, স্যানিটেশন এন্ড হাইজিন) বিষয়কে কেন্দ্র করে এবারের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

ইউনিলিভার বাংলাদেশের মানবসম্পদ পরিচালক কুনাল শর্মার স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রতিযোগিতার প্রথম রাউন্ডে গ্রামীণ এলাকায় নারীদের ব্যবহার উপযোগী স্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবস্থা নিয়ে ক্যাম্পেইনের জন্য তিনটি বিষয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে হয়েছে প্রতিযোগীদের।

দ্বিতীয় রাউন্ডে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পানি নিয়ে ইউনিলিভারের পানি বিশুদ্ধকারী ব্র্যান্ড পিউরিটের সঙ্গে কাজ করতে হয়েছে। এ পর্যায়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিউরিটের ভূমিকা, গ্রামীন এলাকায় নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পানির সমস্যা মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণ এবং বিশুদ্ধ পানি পেতে টিউবওয়েল স্থানান্তরের বিষয়ে ব্যবহারকারীদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি প্রচারণার ডিজাইন তৈরি করতে হয়েছিল।

তৃতীয় রাউন্ডে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে লাইফবয় ব্যন্ডের অবদান মূল্যায়ন করেছে প্রতিযোগীরা। একইসঙ্গে ইউনিলিভারের ইউএসএলপি’র উদ্দেশ্য অনুযায়ী হাত ধোয়ার মাধ্যমে ডায়রিয়া ও শ্বাসযন্ত্রের রোগ কমানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার বিষয়ে সচেতন করার লক্ষ্যে একটি ক্যাম্পেইনের ডিজাইন করেছে। এ ডিজাইনে আচরণগত পরিবর্তনের জন্য মায়েদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছিল।

সবশেষে চুড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহনকারী পাঁচটি দলকে ১৫ মিনিটে একটি নতুন ব্যবসায়িক মডেল উদ্ভাবন করতে বলা হয়েছিল। আগামীতে ব্যবসার পাশাপাশি টেকসই উন্নয়রকল্পে ইউনিলিভারের ব্র্যান্ড ও পণ্য ব্যবহার করে কিভাবে শহরের বস্তিতে নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা যায় সেটাই ছিল এবারের প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য। এছাড়া প্রতিযোগিরা শিশুদের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন আনতে সচেতনতামূলক প্রচারণার ধারণা প্রদান করে।

প্রতিযোগিতার গালা রাউন্ডে বিচারকদের প্যনেলে ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেদার লেলে, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী ও ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো, ব্র্যাকের কমিউনিকেশন এন্ড এমপাওয়ারমেন্ট এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজির সিনিয়র ডিরেক্টর আসিফ সালেহ, ড্রিংকওয়েলের সিইও মিনহাজ চৌধুরী, ঢাকা ওয়াসা’র ব্যবস্থানা পরিচালক ও সিইও প্রকৌশলী তাকসেম এ খান।

কেদার লেলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের বাবা-মা ও শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে তিনি বলেন, তরুণদের মেধা দেখে বলা যায়, বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবন ধারণা অন্যদের থেকে বেশি দূরে নেই।