কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেক টু ব্রিজঘাট সিডিএ সড়কের বেহালদশা

জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার ব্রিজঘাট হতে সিডিএ সড়কের সংযোগ ঘটে মইজ্জ্যারটেক মহাসড়কে। অনেকে আরাকান সড়ক নামে অবহিত করে। এই দীর্ঘ সাড়ে ৩ কিঃ মিঃ সড়ক আজ পথ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

লম্বা সড়ক জুড়ে খানাখন্দ গর্ত আর কার্পেটিং ওঠা কংকালসার হয়ে পুরা সড়কে জনদুর্ভোগ বাড়ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ মেরামত না করায় ভারী যান চলাচলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ পাকা সড়কই এখন মৃত্যু ফাঁদ। কর্তৃপক্ষ মেরামতের কোন উদ্যোগ না নেয়ায় এ সমস্যা বাড়ছে বলে জানা যায়। সড়কটি বেয়ে প্রতিদিন প্রায় ২৫/৩০হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতিদিন মিল কারখানার অসংখ্য পণ্য ও যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল করে। বিশেষ করে উপজেলার বড় বড় মিল মিল ফ্যাক্টরীর যানবাহন গুলো এ রাস্তা দিয়ে বেশি চলাচল করে। ধারাবাহিক ভাবে এসব গাড়ি চলাচলের ফলে খানাখন্দ গর্তগুলো ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। লরি ও ট্রাকসহ ভারী যানবাহন নিয়মিত চলাচল করায় এসব গর্ত ছোট থেকে আরো বড় হচ্ছে। স্থানীয়রা এ সড়ক নিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দোষারোপ দিলেও মূলত সড়কটি রোডস্ধসঢ়; এন্ড হাইওয়ের অধীনে বলে জানা যায়। অনেকের দাবি, কতৃপক্ষ যদি এ সড়কে চলাচল করা ভারি যানবাহন গুলো দিনের একটা সময়ের মধ্যে চলাচলের অনুমতি দেয়, তবে ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমবে বলে তাদের ধারণা। অপরদিকে সংযোগস্থল ইছানগর সড়কের খানাখন্দে ইটের টুকরো ফেলায় তা আরো বিপদের আশংকার সৃষ্টি করছে।

সিডিএ সড়কটির বেশি খারাপ অংশ হলো মইজ্জ্যাটেক থেকে সৈন্যেরটেক পুল পর্যন্ত। এ অংশ এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে করে প্রায় প্রতিদিনই ছাত্রছাত্রী ও রোগী সহ যানবাহনের সমস্যা হচ্ছে। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। স্থানীয় দোকানদার মালেক জানায়, ‘পাকিস্থান আমলে তৈরী করা সৈন্যেরটেক পুল ও খোয়াজনগর নুরুল ইসলাম চেয়ারম্যানের পুল এ সড়কে অবস্থিত। এ দুটি পুলও বড় ঝুঁিকপূর্ণ বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ী মাসুদ রানা। যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা এমনটি আশংকা তাদের। তবে দীর্ঘ দিন ধরে এ সড়কের কোনো সংস্কার কাজ হচ্ছেনা তা নয়। বরং প্রতিবারেই নি¤œমানের কাজের ফলে এ দুর্ভোগ কমছেনা বলে জনগণের অভিযোগ। অপরদিকে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রধান সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, রিকশাসহ ছোট গাড়িগুলো রাস্তায় দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা জানান, মাঝে মধ্যে সড়ক মেরামতের নামে কিছু ইট ভাঙা রাস্তায় ফেললেও তা পর্যাপ্ত নয়। এ ব্যাপারে চরলক্ষ্যার ফারুক জানান, শিগগিরই রাস্তাটি নতুনভাবে নির্মাণ করা জরুরী। কেনোনা এ সড়ক দিয়ে আশেপাশের স্কুল কলেজের শত শত শিক্ষার্থীরা চলাচল করতে ব্যাপক সমস্যায় পতিত বলে জানান তিনি।’

দেখা গেছে, কোন কোন জায়গায় ভারী যানবাহন চলাচল করায় দু’পাশ ভেঙে বসে গেছে। এতে সাধারন মানুষ ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে চরপাথরঘাটা ১নং ওয়ার্ড হয়ে ঘুরে আসতে দেখা যায় অনেকজনকে। ব্রিজঘাট সড়কের সিএনজি চালক মোঃ শফি জানান, ‘এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন রুটের প্রায় কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। দীর্ঘদিন যাবত মেরামত না করায় বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। যার কারণে ঝুঁকি নিয়েই গাড়ি চলাচল করতে হচ্ছে।’ মইজ্জ্যারটেকের ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম জানান,‘শিল্পজাত এলাকা কর্ণফুলীর অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম হলো এ সড়ক। বর্তমানে তা খুবই ঝুকিঁপুর্ণ আর গর্তে ভরে গেছে। সামনে নির্বাচন তারপরেও গাড়ি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে রয়েছে।’ স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ‘টেন্ডারে দেখে অতিদ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের পুনঃনির্মাণ কাজ করা হবে। যেহেতু অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামতের জন্য তালিকা পাঠানো হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফারুক চৌধুরী বলেন,‘সড়কটির সংস্কার বিষয়ে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জরুরী ভাবে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত চলাচলের উপযোগী করা হবে।’