জীবননগর মহিলা কলেজের অধ্যাপিকা কর্তৃক নির্যাতনের শিকার গৃহপরিচারিকার অবশেষে মৃত্যু

মামুন মোল্লা, চুয়াডাঙ্গাঃ চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা শহরের সরকারী জীবননগর আদর্শ সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যাপিকা কর্তৃক নির্যাতনের শিকার গৃহপরিচারিকা লিলি খাতুন (৫০) ঘটনার একদিনের মাথায় গতকাল রোববার সকালে মারা গেছে। নিহত গৃহপরিচারিকা লিলি খাতুন উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া রাজধানীপাড়ার আনসার আলীর স্ত্রী। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নিহত গৃহপরিচারিকার ছেলে শাহেদ হোসেন (২৩) বলেন, আমার মা লিলি খাতুন জীবননগর মহিলা কলেজের প্রফেসর পাপিয়া সারমিন ইতির জীবননগরের বাসায় গত দু’সপ্তাহ আগে দু’হাজার টাকা মাসিক চুক্তিতে কাজে লাগে। আমার মা গত শুক্রবার সকালে আমাদের বাড়ীতে আসে এবং বুধবারে ইতির বাসায় ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রফেসর ইতি বলেন শনিবার সকালের মধ্যে তার বাসায় যেতে হবে। আমার মা তাতে রাজি না হওয়ায় ইতি শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে আমাদের বাড়ীতে আসে। আমার মা তাকে দেখে দৌড়ে প্রতিবেশীদের বাড়ীতে ওঠেন। কিন্তু ইতি আমার মাকে জোর করে টেনে হেঁচড়ে একটি আলমসাধু গাড়ীতে তুলে জীবননগরে নিয়ে যাওয়ার সময় দেহাটি-সন্তোষপুর সড়কের কনটেক মিলের সামনে রাস্তার ওপর ফেলে দিলে মারাত্মক ভাবে আহত হন।

এ সময় অন্য একটি আলমসাধুতে তুলে দিয়ে ইতি জীবননগরে চলে যায়। পরে তাকে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার বিকালে মায়ের অবস্থা খারাপ হলে ডাক্তার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার মাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। ঘটনার অনেক পরে ইতি এলাকায় জানান,আমার মা গাড়ী থেকে লাফ দিয়েছে। কিন্তু আমার মা গাড়ী থেকে লাফ দিতে পারে তা বিশ্বাস হয় না।

নিহত গৃহবধূর পুত্রবধূ বৃষ্টি খাতুনের অভিযোগ আমার শ্বাশুড়ীকে ইতি জোরপুর্বক বাড়ী থেকে উঠিয়ে গাড়ীতে করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আন্দুলবাড়ীয়া মিস্ত্রিপাড়া আমার বাপের বাড়ীর সামনে শ্বাশুড়ীকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। এ সময় শ্বাশুড়ীর গায়ের ব্লাউজ, শাড়ী ছিড়া ছিল এবং কাপড়-চোপড়ে রক্ত মাখা ছিল। সেই সাথে বমিও করছিল। এ ঘটনায় অভিযুক্ত অধ্যাপিকা পাপিয়া সারমিন ইতি বলেন, আমার সাথে আলমসাধু যোগে আসার কথা ঠিক। তবে তাকে আমি গাড়ী থেকে ফেলে দিয়েছি তা সঠিক নয়। আমি আসলে ষড়যন্ত্রের শিকার।