তাহিরপুর সীমান্তে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বাণিজ্য জমজমাট,১১টন কয়লা ও জালরুপীসহ গ্রেফতার ১

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট,চাঁনপুর,টেকেরঘাট ও বীরেন্দ্রনগর সীমান্তে চলছে জমজমাট চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বাণিজ্য।

এসব সীমান্ত এলাকা দিয়ে একাধিক চাঁদাবাজি,মাদক,কয়লা ও অস্ত্র মামলার আসামীরা নিজেদেরকে বিজিবি ও পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে ভারত থেকে ওপেন পাচাঁর করছে জালরুপী, মদ, গাঁজা, হেরুইন, ইয়াবা, গরু,কয়লা,পাথর ও অস্ত্র। সেই সাথে পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল থেকে প্রতিদিন বিজিবি ও পুলিশের নামে উত্তোলন করছে লক্ষলক্ষ টাকা চাঁদা। এলাকাবাসী জানায়,আজ ২৬.১১.১৮ইং সোমবার দুপুর ২টায় বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা গ্রামের শফি মেস্তুরীর ছেলে অস্ত্র ও চাঁদাবাজি মামলার আসামী ল্যাংড়া বাবুল ও তার সহযোগী জাকির হোসেন লাকমাছড়া দিয়ে ভারত থেকে ইয়াবা ও জালরুপী পাচাঁর করার সময় টেকেরঘাট বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার আনিসুল হক ভারতীয় ৯৪হাজার জাল রুপীসহ জাকির হোসেন(৩৫) গ্রেফতার করেন। এসময় ইয়াবার চালান নিয়ে ল্যাংড়া বাবুল পালিয়ে যায়।

এরআগে ল্যাংড়া বাবুল ভারত থেকে কয়লা পাচাঁরের সময় অভিযান চালিয়ে ৮টি ঠেলাগাড়িসহ ১০মে.টন চোরাই কয়লা আটক করলেও ল্যাংড়া বাবুলকে গ্রেফতার করা হয়নি। অন্যদিকে গতকাল রবিবার রাত ১২টায় বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট এলাকা দিয়ে মাদক,কয়লা ও চাঁদাবাজি মামলার আসামী কালাম মিয়া,জিয়াউর রহমান জিয়া,জানু মিয়া ও আব্দুল আলী ভান্ডারী ১বস্তা চোরাই কয়লা থেকে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার দিলোয়ারের নামে ১৫০টাকা,থানার নামে ১২০টাকা ও কয়লা চোরাচালান মামলার আসামী আব্দুর রাজ্জাকের নামে ৫০টাকা চাঁদা নিয়ে চোরাচালানী এহসান মিয়া,মানিক মিয়া,খোকন মিয়া,রুবেল মিয়া,কাসেম মিয়া,সুলতান মিয়াগংকে দিয়ে ভারত থেকে ২০মে.টন কয়লা,৬০০পিছ ইয়াবা ও ৫ কার্টুন অফিসার চয়েজ মদ পাঁচার করে ৫টি নৌকা বোঝাই করে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন গুইলেরখালের পাশে নিয়ে মজুত করে। এই খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার খাইরুল ১মে.টন চোরাই কয়লা আটক করেন।

এসময় বাকি মালামাল নিয়ে চোরাচালানী কালাম,জিয়া ও জানুগং পালিয়ে গেলেও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বালিয়াঘাট বিজিবি। এছাড়া বীরেন্দনগর সীমান্তের ১১৯৩পিলার সংলগ্ন বাগলী এলাকা দিয়ে রংঙ্গাছড়া গ্রামের চোরাচালানী মস্তোফা মিয়া মস্তো,বাগলী গ্রামের হযরত আলী ও মঞ্জুল মিয়া বিজিবি ও পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে ২০০মে.টন কয়লা ও ২হাজার মে.টন চুনাপাথর পাচাঁর করে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলার মনতলা নামকস্থানের আজিজ আরতদারের ডিপুতে মজুত রেখে ওপেন বিক্রি করার পরও এখনও পর্যন্ত আইনগত কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আর চাঁনপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদক মামলার জেলখাটা আসামী আবু বক্কর নিজেকে বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে ওপেন মদ,গাঁজা,হেরুইন,ইয়াবা,গরু,পাথর,কয়লা,কমলা ও অস্ত্র পাচাঁর করছে। এব্যাপারে বালিয়াঘাট ক্যাম্প কমান্ডার দিলোয়ার বলেন,জিয়াউর রহমান জিয়া ও কালাম মিয়া আমাদের সোর্স কিন্তু তাদের সাথে আমার কোন যোগাযোগ নাই,তাদের পাচাঁরকৃত মালামাল আমরা খোঁজে পাইনি,মনে হচ্ছে হাওরের পানিতে কোথাও লুকিয়ে রেখেছে।

টেকেরঘাট কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার আনিসুল হক বলেন,ভারতীয় জালরুপীসহ আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তাহিরপুর থানার ওসি নন্দন কান্তি ধর বলেন,আমাদের থানার কোন সোর্স নাই,আর জালরুপীসহ বিজিবির হাতে গ্রেফতার হওয়া চোরাচালানীকে সন্ধ্যায় জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।