নরসিংদীতে বাহারী রঙ্গের পিঠা খাওয়াতে চাষীরা কাটছে আমন ধান

সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী প্রতিনিধিঃ নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলায় এবার ফসলের খেতে পোকামাকড় ও রোগজীবানু কম হওয়ায় আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তাই কৃষকেরা প্রতিনিয়ত ভোরের সকালে আমন ধান কাটতে জমিতে চলে যাচ্ছে।

এ আমন ধানের চাউল দিয়া হয় বাপা পিঠা, চিতল পিঠা, মেরা পিঠাসহ বাহারি রঙের পিঠা দিয়ে আত্মীয়- স্বজন দের আপ্যায়ন করা হয়। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, এবার উপজেলায় ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। ইতিমধ্যে উপজেলার ২৪ ইউনিয়নে শুরু হয়েছে ধান মাড়াই। উপজেলার কৃষকের ঘরে ঘরে চলছে নতুন ধান তোলার উৎসব। রায়পুরা উপজেলা কর্মকর্তা জানান, এবার রায়পুরায় ১৫ হাজার ১৪০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এই উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের তুলনায় এই বছর চাল উৎপাদনের হার একটু বেশি।

এবারও তাই প্রতি হেক্টরে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ধরা হয়েছিল ৪ দশমিক ৬ মেট্রিক টন। কিন্তু প্রদর্শনী প্লটগুলোর ফলনের হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে, এবার প্রতি হেক্টরে চাল উৎপাদ হবে ৫ দশমিক ৩ মেট্রিক টন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এবার ব্রি ধান ৩২, ব্রি ধান ৩৯, ব্রি ধান ৪৯ ও ব্রি ধান ৫২ চাষাবাদ হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফলন পাওয়া গেছে ব্রি ধান ৩৯ ও ব্রি ধান ৪৯ থেকে। এবার পরিমাণমতো বৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি রোগবালাই, পোকামাকড় তেমন না থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। রায়পুরা উপজেলার পলাশতলী গ্রামের এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে এসব গ্রামের চাষিরা ধান মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে, এখনো সব জমির ধান কাটা হয়নি। রায়পুরা উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের নামাপাড়া গ্রামের চাষি মোঃ সৈয়দ উদ্দিন বলেন, ‘আমি জমিতে এবার ব্রি ধান ৩৯ চাষ করেছি। এখন ধান মাড়াই করেছি।

হেক্টরপ্রতি পাঁচ টন ধান বা ৩ দশমিক ২ টন চাল উৎপাদিত হয়েছে এবার।’ রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখারনগর ইউনিয়নের কৃষক নুরু মিয়া (৪৭) বলেন, ব্রি ধান ৫২ বেশি পানিতে চাষাবাদ করা গেলেও আড়িয়াল খাঁ নদীর পানি কম থাকায় ধানের ফলন কিছুটা ভাল হয়েছে। রায়পুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন,‘রায়পুরা উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নে এবার আমনের ভালো ফলন হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে। আশা করি চাষিরা লাভবান হতে পারবেন।’