প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মানব দেহের উপকারী মৌমাছি

জয়নাল আবেদীন,বেনাপোল(যশোর)প্রতিনিধিঃ মানব দেহের জন্য পৃথীবির সবচেয়ে উপকারী ও সুস্বাদু এবং কোন ভাবেই পচনশীল নয় এমন একটি আশ্চার্য খাবারের নাম মধু। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে এই খাবারের তৈরীর গারিগরের নাম মৌমাছি। ছোট্র একটি ক্ষুদ্র প্রাণি পরিশ্রমী ও উপকারী পতঙ্গটি আজ প্রকৃতি থেকে কমে গেছে অধিকাংশ হারে। কয়েক রকম বিশেষ উপাদানের সংমিশ্রনে তৈরী হয় মধু। আর এমন একটি খাবার শুধু মাত্র এই ছোট্র প্রাণি মৌমাছির দ্বারা সম্ভব। মৌমাছি সাধারণত দলগত ভাবে চলাচল এবং বসবাস করে। মধু তৈরীর এক অভাবনীয় কৌশল আল্লাহ তাআলা এই মৌমাছি পতঙ্গটিকে শিখিয়ে দিয়েছেন। মধু তৈরীর যে কৌশল একটু ভেবে দেখলে বুঝা যায় কেন মধু এত উপকারী এবং আশ্চর্যজনক।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, মৌমাছিরা ফুলের মিষ্টি রস শুষে নিয়ে পাকস্থলির উপরে মধু থলি নামক এক বিশেষ অঙ্গে জমা রাখে। এই মিষ্টি রস মধু থলিতে জমা করার সময় এর সঙ্গে তাদের মুখের লালা থেকে বিভিন্ন উৎসেচক মেশায়। এর ফলে এই মিষ্টি রস আংশিক মধুতে পরিনত হয় যা চাকে এনে ঢেলে দেয়। এরপর ঐ চাকে থাকা তরুণ মৌমাছিরা ছুটে এসে ঢেলে রাখা মধু গুলো মুখে ভরে নেয় এবং তাদের লালার সঙ্গে মিশিয়ে তৈরী করে আসল মধু এরপর ঐ মধু জমা করে মধু রাখার খোপে। শ্রমিক মৌমাছিরা ডানা নেড়ে নেড়ে রক্ষিত মধু থেকে বাড়তি উৎসৃষ্ট্র সরিয়ে দিয়ে খাটি ও ঘন মধুতে রুপান্তরিত করে। মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহের সময় সাধারণত চাকটিকে নষ্ট করে ফেলা হয়। এ কাজের সময় অনেক ক্ষেত্রে বিপুল সংখ্যক মৌমাছি মারা পড়ে। এছাড়াও চাকে অবস্খিত ডিম ও বাচ্চা নষ্ট হয়। এরকম অবস্থার ফলে দিন দিন মৌমাছির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ইদানিং ফসলের ক্ষেতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে লোকালয়েও আশঙ্খাজনক হারে মৌমাছির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।

পাশাপাশি ফসলের ও মানবদেহের ক্ষতি হচ্ছে। তবে মৌমাছি পালনের মাধ্যমে মৌমাছির সংখ্যাকে বাড়ানো সম্ভব। এরপরে আছে মধুর পুষ্টিগুন ছাড়াও নানাবিধ রোগ উপশমকারী ক্ষমতা। ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ানোর সময় মৌমাছিরা তাদের পা এবং বুকের লোমে ফুলের অসংখ্য পরাগরেণু বয়ে নিয়ে বেড়ায়। এক ফুলের পরাগরেণু অন্য ফুলের গর্ভমুন্ডে পড়লে পরাগায়ন ঘটে, যার ফলশ্রুতিতে উৎপন্ন হয় ফল।

এভাবে মৌমাছিরা পরাগায়নের মাধ্যমে ফল ও ফসলের উৎপাদন বাড়ায়। বিশেষ বিশেষ মৌসুমে মৌমাছির চাষকে বাড়াতে পারলে একদিকে যেমন প্রচুর মধু সংগৃহীত হবে অন্যদিকে ফল বা ফসলের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে অধিকহারে। তাই প্রকৃতি থেকে মৌমাছি নামক বহুল উপকারী বন্ধু এই ছোট্র পতঙ্গকে টিকিয়ে রাখতে নিজে সচেতন ও অন্যকে সচেতন হওয়া খুবই জরুরি মলে মনে করেন সচেতন মহল।