এনটিআরসিএ’র গনবিজ্ঞপ্তিতে বঞ্চিত খানসামার ২ মেধাবী নিবন্ধিত

ভূপেন্দ্র নাথ রায়, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভূপেন্দ্র নাথ রায় সম্মিলিত জাতীয় মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান এবং নাজমা পারভীন (নূরী) দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় সমগ্র দিনাজপুর জেলায় প্রথম স্থান লাভ করেও চলতি গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছে না।

কারণ হিসেবে জানা গেছে, পয়ত্রিশোর্ধ শিক্ষক নিবন্ধন সনদ প্রাপ্তরা শিক্ষামন্ত্রনালয়ের নীতিমালা/১৮ এর ১১.৬ আলোকে তারা বহু প্রতিক্ষিত গণবিজ্ঞপ্তিতে বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা জানায় গত ১৯ ডিসেম্বর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কতৃপক্ষ বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে বাদ পড়ে পয়ত্রিশোর্ধ শিক্ষক নিবন্ধিতরা।

এনটিআরসিএ’র ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, খানসামায় উপজেলায় নিন্ম মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে মোট সত্তরটি পদ শূন্য আছে। এই শূন্য পদের কিছু প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালিন শিক্ষক দিয়ে শিক্ষণ প্রক্রিয়া চলছে। ভূপেন্দ্র নাথ সপ্তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। সে ইংরেজি বিষয়ে সম্মান সহ স্নাতকোত্তর লাভ করে এবং নিজের পড়ালেখার খরচ চালাতে অধ্যয়নকাল থেকে শিক্ষকতার সাথে জড়িত। সে স্কুল পর্যায়ে ইংরেজি বিষয়ে নব্বই শতাংশের অধিক নম্বর পেয়েছে। ডোনেশন দিয়ে কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেয়া তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তার প্রত্যাশা দেশের যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সে মেধায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবে।

ভূপেন্দ্র নাথের সাথে হলে সে জানায়, সমন্বিত জাতীয় মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেও এনটিআরসিএ’র গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছিনা এর চেয়ে হতাশা এবং দূর্ভাগ্য আর হতে পারে না। এদিকে খানসামা উপজেলার মৃত আফাজ উদ্দীন শাহ (সাবেক শিক্ষক) এর মেয়ে নাজমা আহমেদ নূরী বলেন, আমি ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পাশ করি। আমার এসএসসি থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত ফলাফলে প্রথম বিভাগ/শ্রেণি অর্জন করি। দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শিক্ষক নিবন্ধনে সমগ্র দিনাজপুরে প্রথম স্থান লাভ করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাইনি। আমরা এনটিআরসিএ’র দিকে চেয়ে আছি শুধুমাত্র ন্যায়সংগত একটি নিয়োগের প্রত্যাশায়।

মহামান্য হাইকোর্ট গত ১৪ ডিসেম্বর/১৮ তার রায়ে রীট পিটিশনারদের নিয়োগ দেয়ার আদেশ দেয়। এনটিআরসিএ উক্ত রায়কে থোড়াই কেয়ার করে পযত্রিশোর্ধ প্রার্থীদের আদালতের আদেশ বিকৃত করে বঞ্চিত করছে। বেসরকারি শিক্ষক নীতিমালা/১৮ এর আলোকে বয়স চ্যালেঞ্জ করে আমাদের করা ২ রিটে গত ১৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার মহামান্য আদালত পয়ত্রিশোর্ধ শিক্ষক নিবন্ধিতদের কেন আবেদনের সুযোগ দেয়া হবে না এই মর্মে রুল জারি করেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি আদালত অবকাশকালীন সময়ে গণবিজ্ঞপ্তি দেয়। পয়ত্রিশোর্ধ নিবন্ধিতরা বাদ পড়ায় আমরা মর্মাহত।

এখানে উল্লেখ্য যে, ১৬৬ টি রিটের চুড়ান্ত রায়ের এক নম্বর পয়েন্টে নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সনদের মেয়াদ বহাল থাকার কথা লিখা আছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত কোন বয়স উল্লেখ না থাকায় মহামান্য হাইকোর্ট রায়ের সাত নম্বর পয়েন্টে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগে (এন্ট্রি প্রসেসে) বয়স নির্ধারণ করার কথা বলেন।

পয়ত্রিশোর্ধ মেধাবী শিক্ষক নিবন্ধিতরা এনটিআরসিএ’র বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টের দেয়া রায়ের অবমাননার অভিযোগ তুলেছেন। তারা আরো অভিযোগ করেন যে, ইনডেক্সধারী শিক্ষরা যদি পয়ত্রিশের পরে সুযোগ পায়, তাহলে তারা সনদ এবং মেধার শীর্ষে থেকে তাদেরকে কেন বঞ্চিত করা হচ্ছে? বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেধাবীদের সুযোগদানে তারা এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।