কক্সবাজারে ধানের শীষের প্রার্থীকে ভোট না দিতে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নিষেধাজ্ঞা

জসিম উদ্দীন জিহাদ, কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারের ২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়ায়) স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের ধাক্কাধাক্কি এখনো অব্যাহত রয়েছে। এর জেরে জামায়াতের মন রক্ষা করতে কক্সবাজার ২ (মহেশেখালী- কুতুবদিয়া)আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীকের ভোট না দিতে প্রতিনিয়ত নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

এমনকি কক্সবাজার জেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে ধানের শীষের প্রার্থী সাবেক দুইবারের সাংসদ আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ ফরিদের পক্ষে নির্বাচন না করে, স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদের পক্ষে নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীদের। জামায়াতের এ নেতা এবার আপেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

বিএনপির নেতাদের দাবি মহেশখালী কুতুবদিয়ায় তাদের দলীয় কোন প্রার্থী নেই। ওই আসনটি জোটগতভাবে শরিক দল জামায়াতকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাই তারা জোটের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে দলীয় নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশনা দিচ্ছেন। তবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এ কোন ধরনের বিদ্রোহী প্রার্থী! এ নিয়ে জনমনে প্রশ্নের কোন শেষ নেই। (মহেশখালী-কুতুবদিয়ার) বেশিভাগ বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা জানেন না কে তাদের জোটগত চুড়ান্ত প্রার্থী? স্থানীয় জামায়াতের নেতাকর্মীদের দাবী জোটগতভাবে হামিদুর রহমান আযাদ-ই ২৩ দলীয় তথা ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত চূড়ান্ত প্রার্থী। অন্যদিকে একই দাবিতে অটল স্থানীয় বিএপির নেতাকর্মীরাও।

বিএনপির হাইকমান্ড সূত্রে জানা গেছে, জোটগত সিদ্ধান্তের কারণে কক্সবাজার-২ উক্ত আসনে জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাক্ষরিত চিঠিও দেওয়া হয়, কিন্তু জামায়াত নেতা মনোনয়ন দাখিল করার সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী উল্লেখ করায় তাকে নির্বাচন কমিশন ধানের শীষ প্রতীক দিতে অপরাগতা জানিয়েছে। পরে নিজেদের পছন্দমত আপেল প্রতীক বরাদ্দা নেন তারা।

অন্য দিকে বিএনপি নেতা সাবেক দুইবারের সাংসদ আলমীর মোহাম্মদ মাহফুজ ফরিদকে দল থেকে প্রাথমিক মনোয়ন দিলেও চূড়ান্ত মনোয়ন এবং প্রতীক বরাদ্দের কোন চিঠি দেওয়া হয়নি। সে হিসাবে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী। একজন বিদ্রোহী প্রার্থীকে, যিনি দলীয় সাক্ষরিত ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দের কোন চিঠি- ইস্যু করতে পারেনি এমন প্রার্থী কিভাবে ধানের শীষ প্রতীক পায় প্রশ্ন বিএনপি নেতাদেরও।

এই ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহাজান চৌধুরীর জানান, আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ ফরিদ সম্পূর্ণ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করছেন। তিনি আরো জানান, দল থেকে তাকে প্রাথমিক মনোয়ন দিলেও চূড়ান্ত মনোয়ন দেওয়া হয়নি।

জোটগত সিন্ধান্তের কারণে উক্ত আসনে জামায়ত নেতা এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ ই জোটের প্রার্থী। তিনি আরোও জনান, একজন বিদ্রোহী প্রার্থীকে কিভাবে দলীয় চূড়ান্ত মনোয়ন ছাড়া একটি দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয় সেটা জানতে চেয়ে কক্সবাজার ডিসি’কে গত ২১ ডিসেম্বর লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

বিএনপির দলীয় সূত্র মতে, বিএনপি’র চূড়ান্ত মনোনয়নপত্র ছাড়া আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদক’কে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়ায় রিটার্নিং অফিসারকে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে গিয়ে এই লিগ্যাল নোটিশটি প্রদান করেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্রমতে, পরে এ বিষয় খতিয়ে দেখতে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দীন আহামদকে নির্দেশ দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার একেএম নুরুল হুদা। তবে সময় পার হয়ে গেলেও এই ব্যাপারে এখনো কোন জবাব পাননি বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপি।

জামায়াত নেতা এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ জেলে থাকায়, এই ব্যাপারে ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ ফরিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।