কক্সবাজারে শুটকীর আড়তসহ ১৫ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন

মুহম্মদ তাহজীবুল আনাম, কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ কক্সবাজার পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরারটেক এলাকায় এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে মালামালসহ ১২টি দোকান ও রেস্তুরা এবং তিনটি শুটকীর আড়ত ভস্মিভূত হয়েছে। এতে মুদিখানার প্রয়োজনীয় রসদ, মোবাইল ও নগদ টাকাসহ প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

শুক্রবার বিকাল তিনটার দিকে নাজিরারটেক মাছঘাট নতুনবাজার কাদের মার্কেটে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কেউ হতাহত না হলেও অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানাতে পারছেন না কেউ। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন দমকল বাহিনী।

পুড়ে যাওয়া কাদের মার্কেটের মালিক কাদের সওদাগর জানান, বেলা পৌনে তিনটার দিকে অকস্মাত আগুন লেগে তা দ্রুত এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছড়িয়ে যায়। আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসের গতিবেগের সাথে আগুনের লেলিহান শিখাও একের পর এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে গ্রাস করে মালামালসহ ভস্মিভূত করেছে।

তিনি আরো জানান, আগুনে তার নিজেরসহ ওবাইদুল হক, করিম সওদাগর, ফরিদুল আলম, মালেক, কাশেম সওদাগরের মুদির দোকান, এমরান সওদাগর, আবদুস সোবহানের রেস্তুরা ও কুলিং কর্ণার, ডিজেল বিক্রির দোকান এবং মীর কাশেমের শুটকীর আড়তসহ ১৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভস্মিভূত হয়েছে। সবকটি মুদি দোকান থেকে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারে ভোগ্যপণ্য এবং অন্যান্য রসদ যোগান দেয়া হতো।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সমিতিপাড়া কক্সটন কে জি স্কুলের পরিচালক মোস্তফা সরওয়ার জানান, সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরা ট্রলার গুলো মাছঘাট এলাকায় নোঙ্গর করে। বোটের মাঝিমাল্লারা নেমেই আহরিত মাছগুলো মৎস্য ব্যবসায়ীদের দেয়ার পর মুদিখানার দোকান গুলোতে তাদের মোবাইল গুলো চার্জে দেন। জমা রাখেন নিজেদের ব্যবহার্য মালামাল, নগদ টাকা। যাওয়া-আসা উভয় সময়ে এটি করে থাকেন তারা। খবর পেয়েছি মুদিখানার দোকান গুলোতে প্রায় অর্ধশত মাঝি মাল্লার মুঠোফোন চার্জে ছিল। কাশেম সওদাগরের দোকানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও ট্রলার সংশ্লিষ্টদের জমা ছিল নগদ টাকা প্রায় ১৫ লাখ । এছাড়াও প্রায় প্রতিটি মুদিখানা দোকান মালামালে ভর্তি ছিল বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। এতে মালামাল, নগদ টাকা, মুঠোফোন, শুটকী এবং দোকানঘর মিলে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা ধারণা করছেন।

তিনি আরো জানান, আগুনের লেলিহান শিখা দেখে স্থানীয় শুটকি পল্লী ও মাছঘাট এলাকার শ্রমিক এবং বসবাসরতরা দ্রুত ঘটনা স্থলে আসেন। তারা আগুন নেভাতে যে যার মতো চেষ্টা চালায়। খবর আধাঘন্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে আসে দমকল বাহিনীও। স্থানীয়দের পাশাপাশি তারাও দ্রুত চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনায় আরো অগণিত মৎস্য উৎপাদন মাচা, ঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুনের আগ্রাসন থেকে রক্ষা পায়।

কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স’র কর্মকর্তা শাফায়েত রহমান সাগর জানান, খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। দ্রুত চেষ্টা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয় আগুন। রেস্তুরার চুল্লি বা শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। এরপরও অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার চেষ্টা চলছে। অগ্নিকান্ডে ডজনাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মালামালসহ ভস্মিভূত হয়েছে। তবে, ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনো নিরুপণ করা যায়নি।