নওগাঁর আত্রাইয়ে আড়াই লাখ মানুষের জন্য ৩ জন চিকিৎসক

মোঃ খালেদ বিন ফিরোজ, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নওগাঁর আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা চলছে তিনজন চিকিৎসক দিয়ে। চিকিৎসক সঙ্কটে স্বাস্থ্যসেবা অনেকটাই ভেঙে পড়েছে এ হাসপাতালে। ফলে চিকিৎসা না পেয়ে অনেক রোগীই ফিরে যাচ্ছেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ২৪ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও এর বিপরীতে আছেন মাত্র তিনজন। এতে গড়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ২০০-২৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন মাত্র এ তিনজন চিকিৎসকের কাছ থেকে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর আগে হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নিত করা হয়।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তত্ত্বাবধায়ক, আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও), জুনিয়র কনসালটেন্ট, মেডিসিন, সহকারী সার্জারি ও ডেন্টাল সহ মোট ২৪টি পদ রয়েছে। তবে হাসপাতালে কর্মরত আছেন তিনজন। বাকি পদগুলো চিকিৎসকের অভাবে দীর্ঘদিন ফাঁকা রয়েছে। হাসপাতালে ডাক্তার না থাকায় রোগীরা বাইরের ক্লিনিকের দিকে ঝুঁকছেন। এতে দালালদের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হতে হচ্ছে এসব মানুষকে।

এছাড়া বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোর্শেদ মোঃ মনিরুজ্জামান প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনজন ডাক্তার রোগীদের চাপ সামলাতে হাঁপিয়ে উঠেছেন। এছাড়াও রয়েছে ওষুধ সঙ্কট। ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের নাম থাকলেও হাসপাতালে না পাওয়ায় রোগীদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে সেগুলো।

উপজেলার খোলাপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চিকিৎসা নেয়ার জন্য হাসপাতালে এলেও চিকিৎসক সঙ্কট থাকায় তেমন সেবা পাওয়া যায় না। যে কয়জন ডাক্তার আছেন প্রতিদিন চিকিৎসা দিতে গিয়ে রোগীদের ভীড়ে হাঁপিয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, গ্রামের মানুষরা নিতান্ত গরিব ও অসহায়। তাদের বেশিরভাগই সরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কটে রোগীরা সেই চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই এলাকাবাসীর সুবিধার্থে সুচিকিৎসার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া দরকার।

আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোর্শেদ মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও এখনো সে তুলনায় জনবল আসেনি। ফলে চিকিৎসা দেয়ার ইচ্ছা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে চাপের মধ্যে থেকেও ডাক্তাররা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছেন।

তিনি আরও জানান, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে দুইজনকে নিয়ে আসা হয়েছে। সম্প্রতি স্পেশাল বিসিএসের মাধ্যমে ডাক্তার নেয়া হচ্ছে। অতি শিগগিরই তারা যোগদান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুমিনুল হক বলেন, গোটা জেলাতেই চিকিৎসক সঙ্কট রয়েছে। তবে শিগগিরই চিকিৎসক নিয়োগ হবে।