পটুয়াখালীর চারটি আসনে নৌকার নিরঙ্কুস জয়, ২০ প্রার্থীর মধ্যে ১৬ জনেরই জামানত বাতিল

জাহিদুল ইসলাম, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ আজ ৩১ ডিসেম্বর পটুয়াখালীর চারটি সংসদীয় আসনে নৌকা প্রতীকের চার প্রার্থীর নিরঙ্কুস বিজয় হয়েছে। আটটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ চারটি সংসদীয় আসনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা তাদের প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ফলে নির্বাচন নীতিমালা অনুযায়ী পটুয়াখালীর চারটি আসনের বিভিন্ন দলের ১৬ জন প্রার্থীর জামানত বাতিল করা হয়েছে।

অপরদিকে ব্যাপক ভোটের ব্যবধানের এ বিজয়কে তারা মনে করছেন-স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির বিজয়, উন্নয়নের বিজয়। ভোট চোর দুর্নীতী বাজদের পরাজয়।

পটুয়াখালী-১ আসনে (পটুয়াখালী সদর-মির্জাগজ্ঞ-দুমকী) নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, বর্ষীয়ান নেতা এবং সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান মিয়া। ১৫৩টি কেন্দ্রে তার প্রাপ্ত ভোট ২,৭০,৯৭০। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী হাত পাখা নিয়ে পেয়েছে ১৫,১০৩ ভোট। ১০,৩৬৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিএনপি প্রার্থী সাবেক স্বরাস্ট্র মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চেীধুরী। এ আসনে মোট ৩,৯৩,৪৭৪ ভোটের মধ্য ৩,০৪,৫৭৬ ভোট প্রয়োগ করেছে।

সপ্তম বারের মত বিপুল ভোটের ব্যবধানে পটুয়াখালী-২ আসন (বাউফল) থেকে বিজয়ী হয়েছে জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ আসম ফিরোজ। ১০৮টি কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন ১,৮৫, ৭৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী হাতপাখা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯,২৬৯ ভোট। আর ৫,৬৬০ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি’র প্রার্থী সালমা আলম। এ আসনে মোট ভোটার ছিল ২,৫১৮৭৩। তাদের মধ্যে ২,০২,৭২৯ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।

সিইসি’র ভাগ্নে পটুয়াখালী-৩ আসনের (গলাচিপা-দশমিনা) আওয়ামীলীগ প্রার্থী এসএম শাহজাদা নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়াই করে বিজয়ী হয়েছেন, আর ভোট পেয়েছে ২,১৫,৫৬৯। ১১৮টি কেন্দ্রে ৭,১২৬ ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের ডা. কামাল। সদ্য বিএনপিতে যোগ দিয়ে এ আসনের আলোচিত মুখ গোলাম মাওলা রনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়াই করে পেয়েছেন৬,১২৬ ভোট। এ আসনে ২,৯৮,৬৭৫ ভোটারের মধ্যে ২,৩৩,৬২৯ ভোট প্রয়োগ হয়েছে।

অর্থনৈতিক বিবেচনায় দখিনের সবচেয়ে দামী আসন পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) এ নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধীতা করেছেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মুহিব্বুর রহমান। ১১০টি ভোট কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফলে তিনি পেয়েছেন ১,৮৮.৮১২ ভোট। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা হাত পাখা প্রতীক নিয়ে মাওলানা হাবিবুর রহমান পেয়েছেন ৬,৮০৪ ভোট। আর ৬১৮৫ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি দলীয় প্রার্থী এবিএম মোশারফ হোসেন। এ আসনে মোট-২,৪৯,০৩৫ ভোটের মধ্য ২,০১০১৮ ভোট প্রয়োগ হয়েছে।

বিজয়ী এসব প্রার্থীদের সোমবার সকালে দলীয় কার্যালয়ে স্বাগত জানান তৃনমুলের নেতা-কর্মী, সমর্থকসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন। দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে পটুয়াখালী-৪ আসনের বিজয়ী প্রার্থী অধ্যক্ষ মুহিব্বুর রহমান মহিব বলেন, এ বিজয় স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির বিজয়, উন্নয়নের বিজয়। ভোটচোর দুর্নীতি বাজদের পরাজয়।

এসময় তিনি অর্থনৈতিক বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ন এ আসনকে জেলায় উন্নীত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর যেসব মেঘা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এ এলাকায় চলমান রয়েছে তা দ্রুত বাস্থবায়নসহ স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে এসব কাজে সম্পৃক্ত করা হবে। পাশাপাশি সন্ত্রাস, মাদক এবং সালিশ বানিজ্যমুক্ত সমাজগড়া হবে।