বান্দরবানে নির্বাচনী প্রচারণায় দুই বড় দলের প্রার্থীর সহধর্মিনীরা

চাই মারমা, বান্দরবান প্রতিনিধিঃ বান্দরবান আসন্ন ৩০০নং আসনে নির্বাচনের মাঠে স্বামীরা প্রার্থী, পক্ষে স্ত্রীরা কি ঘরে বসে থাকতে পারি? নির্বাচনী যুদ্ধে তাই রাত-দিন এক করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন দু সহধমীর্নি রা। পাড়া মহল্লা দূর্গম গ্রামে তৃনমুল পর্যায় ছুটছেন ভোটারদের কাছে একটা মূল্যেবান ভোট পাওয়ার আশায়। পাড়া এলাকায় স্থানীয় দেরকে নিয়ে বিভিন্ন সমাবেশে করে যাচ্ছে।

কিন্তু, জেলা শহর ছাড়িয়ে তারা এখন প্রত্যন্তপর্বত দূর্গম পথ পেরিয়ে এলাকায়ও ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে স্বামীর পক্ষে দু হাতে ভোট প্রার্থনা চাইছেন। বাংলাদেশের দক্ষিণেঞ্চলে সবুজ অরণ্য পাহাড় ঘেরা ঝর্ণা লীলাভুমি সর্বশেষ জেলা বান্দরবান ৩০০ নং আসনে মূল লড়াইটা হবে নৌকা এবং ধানের শীষের মার্কায়। এতে পাহাড়ের শক্তিশালী আঞ্চলিক সংগঠন জনসংহতি সমিতি নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় ভোটের মাঠে বিভিন্নমত চাপা গুঞ্জন বিরাজ করছে বলে জানা যায়। এই পাবত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক সংগঠনের সমর্থন নিরব ভোটাররা কোন দিকে ঝুঁকছেন তা নিয়ে দুই প্রার্থীরই রয়েছে উত্তাপিত উৎকন্ঠা।

তাই একেবারেই সময় নষ্ট করছেন না অক্লান্ত পরিশ্রমের দুই শক্তিধর প্রার্থীর স্ত্রীরা। সকাল থেকে দিন গভীর রাত পর্যন্ত বিরতিহীন প্রচারণায় অংশ নিয়ে নৌকা ও ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাইছেন। অতি ঠান্ডা কনকনে কুয়াশায় শীত উপেক্ষা করে ভোর থেকে সারারাত পর্যন্ত প্রচারণার মাঠে রয়েছেন মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর স্ত্রী মে হ্লা প্রু। প্রতীক বরাদ্দের পরপরই পাঁচবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর পক্ষে প্রথমেই মাঠে দেখা যায়, স্ত্রী মে হ্লা প্রু।

আবার বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার কনিষ্ঠ বোন মে হ্লা প্রু দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে রাত-দিন ভর সমান তাল মিলিয়ে প্রচারণায় চালিয়ে যাচ্ছেন। দুর্গম পাহাড়ী পথ সীমান্ত উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে আরম্ভ করে লামা, আলিকদম এমনকি দুর্গম থানছির প্রত্যন্ত পাহাড়ী জনপদে গিয়েও স্বামীর পক্ষে ভোটারদের সাথে মুখেোমুখি হয়ে, দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি বা অংগীকার। তার সাথে সাথে তিনি ইতি মধ্যে বান্দরবান জেলা শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের গিয়ে পাড়ায় পাড়ায় মহিলাদের নিয়ে সমাবেশ করেন। তিনি বিভিন্ন গরীব দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র প্রদান করেন মেহ্লাপ্রু।

এব্যাপারে বীর বাহাদুর উশৈসিং পত্নী মে হ্লা প্রু জানান, নারী ভোটারদের কাছে টানতে নারীরা সবচেয়ে বেশি মুল ভূমিকা বর্তমানে আছে ভবিষৎ তে থাকবেন। এর পর তিনি বান্দরবানের দুর্গম জনপদের প্রতিটি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন বা চাইছেন।

আবার, অন্যদিকে প্রয়াত ১৩ তম বোমাং রাজা ক্যজসাইন এর নাতনি ও ১৫ তম বোমাং রাজপুত্র অংশৈ প্রু চৌধুরীর ছেলে বিএনপির প্রার্থী সাচিং প্রু জেরীর স্ত্রী মেমচিং মারমাও নির্বাচনী প্রচারণার ভোট যুদ্ধে কম যাচ্ছেন না। তিনি ও মহিলা দলের নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে প্রত্যন্ত দুর্গম পাহাড়ী এলাকা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ধানের শীষের পক্ষে তিনি চষে চষে বেড়াচ্ছেন দেখা যায়, ভোটের মাঠে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা বা সভা। তিনি ধারাবাহিকভাবে ভোটারদের কাছে গিয়ে স্বামীর পক্ষে নানা প্রতিশ্রুতিও দিয়ে যাচ্ছেন।

এবিষয়ে জেরী পত্নী মেমচিং মারমা আরো বলেন, আমি রাজনীতির মানুষ না হলেও স্বামীর কারনে বান্দরবানের রাজনীতি টা খুব কাছ থেকে দেখেছি। মানুষের কাছ থেকে আশানুরুপ সাড়া পাচ্ছি বলে অতি কষ্ট হলেও সাধারণ ভোটারদের সমর্থন চেয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছি। আমার প্রচারণায় আমি নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, বাল্য বিয়ে, যৌতুক বিরোধী কর্মকান্ড কে গুরুত্ব দিয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এদিকে স্ত্রীরা প্রচারণা যুদ্ধে নামায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে আছেন প্রার্থী স্বামীরা। যেসব জায়গায় তারা যেতে পারছেন না সেসব জায়গায় স্ত্রী, পুত্র ও পরিবারের সদস্যরা যাচ্ছেন। দু প্রার্থী পরিবারের সকল সদস্য মিলে ভোটারদের কাছে ছুটে যাচ্ছে, আর আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান ৩০০ নং আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে জনসাধারণের উন্নয়নের কথা বলে সবিনয়ে ভোট ভিক্ষা চাইছেন ।