বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলন ১৬ কোটি মানুষের শত্রুতে পরিণত হয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনারঃমিনু

রাজশাহী, নিজেস্ব প্রতিবেধকঃ বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলন ১৬ কোটি মানুষের শত্রুতে পরিণত হয়েছে প্রধাননির্বাচন কমিশনার।

ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থীসহ সমর্থকদের উপর গুলি হামলা, গণ-গ্রেফতার বন্ধসহ নির্বাচনে লেভেল প্লেইিং ফিল্ড নিশ্চিৎকরণের দাবীতে আজ বুধবার বেলা ১১ টার সময় নগরীর মালোপাড়াস্থ বিএনপি কার্যালয়ে প্রার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মিনু বলেন, এই সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনার তামাশারনির্বাচন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। সারা দেশে বিরোধীদের নিধনের সরকার দলীয়প্রার্থীরা লিপ্ত থাকলেও তাঁর চোখে পড়ছে না। সারা দেশের ন্যায় রাজশাহীতে একইঅবস্থা বিরাজ করছে। প্রতিটি আসনে সরকার দলীয় প্রার্থীরা নিজে উপস্থিত থেকে ধানের শীষের প্রার্থীর উপর হামলা করছে। নির্বাচনী অফিস ভাঙ্গচুর ওপেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে। পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন ছিড়ে ফেলছে। প্রচারণায় বাধা প্রদান করছে। পুলিশ দিয়ে নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।

এছাড়াও প্রতিদিন শত শত নেতাকর্মীকে অবৈধভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনকি ধানের শীষের প্রধান নির্বাচনী এজেন্টদেরকেও গ্রেফতার করতে দ্বিধাকরছে তারা। সরকার দলীয় প্রার্থী নিদের্শনায় প্রতিটি আসনে সন্ত্রাসের রাজত্বকায়েম করেছে তারা। এতে সরাসরি সহযোগিতা করছে বিশেষ এলাকার কিছুপুলিশ কর্মকর্তা। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করছে বলে মিথ্যাচার করছে। মিনু এই আজ্ঞাবহ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পুণরায় আজকের মধ্যেপদত্যাগের দাবী জানান।

তিনি আরো বলেন, যে সন্ত্রাস হচ্ছে তার দায়িত্ব প্রধান নির্বাচন কমিশনকেনিতে হবে। রাজশাহীতে ১৯৬২ সালের রায়োস এর ন্যায় কর্মকা- চালাচ্ছে সরকার দলীয় প্রার্থী ও সমর্থকরা। তিনি আরো বলেন, জনগণের সেনাবাহিনীরপ্রতি পূর্ন আস্থা আছে। সে আস্থার জায়গা পূরন করার জন্য সেনাবাহিনীরপ্রতি অনুরোধ জানান তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে মিনু বলেন, সবধরনের নির্যাতন উপেক্ষা করে ধানের শীষের প্রার্থী, নেতাকর্মী ও সমর্থকরামাঠে থাকবে এবং নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মাঠ ছাড়বে। সেই সাথে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সংসদ গঠন করবে বলে জানান মিনু।

এদিকে তানোর-গোদাগাড়ী আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিষ্টার আমিনুল ইসলাম বলেন, সরকার দলীয় নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় হবে বুঝতে পেরে ভীত হয়ে নিজে উপস্থিত থেকে দলীয় ক্যাডার ওসন্ত্রাসীদের দিয়ে সমস্ত নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। একটি পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন তিনি রাখেন নি। সেই সাথে পুলিশকে দিয়ে নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার করাচ্ছে। ধানের শীষের সমর্থকভোটারদের নিজে মারধর অব্যাহত রেখেছে। সেইসাথে ভোটারদের হুমকী দিচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন অফিস, থানা এবং রিটার্নিং অফিসারের নিকট অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হচ্ছে। সেনাবাহিনীমাঠে নামার পর তাদের বিতর্কীত করতে সরকার দলীয় ক্যাডাররা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সেইসাথে পুলিশ সদস্যরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগকরেন। অতিদ্রুত এই সকল সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধে রাজশাহী রিটার্নিং অফিসারও নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবী জানান। সেইসাথে নির্বাচনী মাঠ ছেড়েকোনভাবেই যাবেন না বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

পবা-মোহনপুরের ধানের শীষের প্রার্থী এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন বলেন, তাঁরএলাকা এখন সন্ত্রাসের এলাকাতে পরিণত হয়েছে। দিনরাত ধানের শীষের নির্বাচনীঅফিস ভাংচুর করে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে, পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনছিড়ে ফেলছে। সরকার দলীয় প্রার্থী নিজেই কর্মক্যান্ডর সাথে সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, দলীয় সরকারের অধিনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না তারা পূর্ব থেকেই বুঝতে পেরে নির্দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচন দাবী করেছিলেন। কিন্তু এই সরকার তাদের অবস্থান বুঝতে পেরে নিজের হাতে ক্ষমতা রেখে নির্বাচন করছে। তারা পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করেভোট কারচুপি ও জালিয়াতি করে পুণরায় ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু এইষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করবেন বলে জানান মিলন। সেইসাথে নেতাকর্মীদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় নামলেই নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্টকে আটক করে নিয়ে গেছে। জামিন যোগ্য হলেও ষড়যন্ত্র করে তাঁকে জামিন না দিয়েকারাগারে পাঠিয়েছে বলে জানান তিনি। পুলিশ সরাসরি সরকারী দলের হয়ে কাজ করছে। ভোটার ও নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা নির্বাচনকে একতরফা করার জন্য এই কৌশল অবলম্বন করছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য নেতাকর্মীদের আহবান জানান। সেই সাথে নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ধানের শীষে ভোট প্রদান করার জন্য নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণভোটাদের পরামর্শ দেন তিনি।

এসমেয় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য ও রাজশাহী সদর আসনের ধানের শীষের প্রার্থীজননেতা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট কামরুল মনির, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও তানোর-গোদাগাড়ীর ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিষ্টার আমিনুল হক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এবং পবা-মোহনপুর আসনের ধানের শীষের প্রার্থী এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপি’র সভাপতি এ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন তপু, মহানগর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আসলামসরকার, জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন, তানোর-গোদাগাড়ীর ধানের শীষের প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ব্যারিষ্টার মাহফুজুর রহমান মিলন, মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম সমাপ্তসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।