গুরুদাসপুরে পেয়ারা ও ড্রাগনফল চাষ করে সফল চাষী

নাজমুল হাসান নাহিদ, গুরুদাসপুর(নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুরে শখের বসে পেয়ারা চাষ ও ড্রাগন ফল চাষ করে সফল প্রভাষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম।

উপজেলার দক্ষিন নাড়িবাড়ী এলকায় নিজের দেড় বিঘা জমিতে পেয়ারা ও দশ শতক জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করে শুরুতেই সফলতার মুখ দেখেছেন তিনি। নিজের জমিতেই তিনি প্রথম পেয়ারা ও ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। সফলতার মুখ দেখে নতুন করে বড় ধরনের পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

জাহাঙ্গীর আলম গুরুদাসপুর উপজেলার পৌর সদরের চাঁচকৈড় সরকার পাড়ার মোঃ ফয়েজ সরদারের একমাত্র ছেলে। ব্যবসায়ী প্রভাষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমি ঢাকা এ.ইউ.বিই উনিভার্সিটি থেকে বাংলায় অনার্স মাস্টার্স করেছি। আমরা তিন বোন একভাই। আমি সবার ছোট। পড়াশোনা শেষে বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতাম। তখন আমার বাবা আমাকে বাড়িতে এসে নিজের জমি গুলো চাষাবাদ করতে বলে।

সবার ছোট হওয়ায় কেউ আমাকে বাড়ির বাহিরে রাখতে চায়নি। তাই চাকুরীছেড়ে বাড়িতে চলে আসি। বাড়িতে এসে প্রথমত একটি ব্যবসা করতে থাকি এবং স্থানীয় রোজী মোজাম্মেল মহিলা ডিগ্রি কলেজে চাকুরী পাই। আমি নাটোরের বিভিন্ন জায়গায় পেয়ারা ও ড্রাগন ফলের বাগান দেখি। তখন আমার মনে হলো আমার নিজের জমিতে আমি এই বাগান গুলো করতে পারি।

প্রথমত অনেকেই ভয় দেখাতো যে লাভ হবে না। তারপরও ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দেড় বিঘা জমির ওপর ১৬৫ টি থাই পেয়ারার গাছ রোপন করি। চারা রোপনের পরে শ্রমিক দিয়ে এবং আমার শিক্ষকতা ও ব্যবসার পাশাপাশি বাগানে সময় দেই। চারা রোপনের ৬ মাস পর থেকেই পেয়ারা বিক্রি শুরু করি। পেয়ারা বাগানে আমার এ যাবৎ পর্যন্ত মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। তবে কয়েকবার বিক্রি করেছি এবং আগামীতে বিক্রি করলে আমার মোট বিক্রি আসবে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। এখন পেয়ারা প্রতিকেজি পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।

এসব পাইকাররা ঢাকা, রাজশাহী, সিরাজঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বাগানে এসে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। ড্রাগন ফল চাষ শুরু করি ২০১৭ সালের বর্ষা মৌসুমে। দশ কাটা জমির ওপর ১০০ টি গাছ দিয়ে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করি। এতে আমার খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। তবে ড্রাগন ফল একবার বিক্রি করেছি ৭ হাজার টাকা এবং আগামীতে মোট বিক্রি আশা করছি ৭০-৮০ হাজার টাকা।

শুরুতেই পেয়ারা ও ড্রাগন ফল চাষ করে আমি ব্যাপক সফলতা পেয়েছি। আগামীতে আমি আমার আরও ৪ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করবো। কেননা আমাদের গুরুদাসপুরে এই প্রথম ড্রাগন ফল আমি চাষ শুরু করেছি এবং ভাল ফল পেয়েছি। আশা করি আগামীতে বড় করে করলেও ভাল সফলতা পাবো ।

এমনকি গুরুদাসপুর কৃষি অধিদপ্তর অফিস থেকে আমাকে অনেক সাহায্য করেছে এবং বিভিন্ন কম্পানির রিপরেজেন্টিভদের কাছ থেকেও আমি অনেক সাহায্য পেয়েছি। সব মিলিয়ে সবার সহযোগিতায় আমি সফল। আমি চাই সবাই পেয়ারা বাগান ও ড্রাগন ফলের চাষ করুক।”

গুরুদাসপুর কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল করিম বলেন, এ বছর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় পেয়ারার অনেক চাষ হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে সকল চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। তবে ড্রাগন ফল এই প্রথম জাহাঙ্গীর আলম শুরু করেছেন। শুরুতেই তিনি ভাল ফল পেয়েছেন। আমরা তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছি তিনি যদি আরও বড় জায়গা নিয়ে করে তখনও তাকে সহযোগিতা করা হবে।