মোঃ জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর প্রতিনিধি : কৃষিসমৃদ্ধ অঞ্চল শেরপুরের সর্বত্র শেরপুরের সর্বত্র বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
পৌষ মাসের কনকনে শীত উপেক্ষা করে মাঠে মাঠে চলছে ক্ষেতে সেচ দেওয়া, ক্ষেত চাষ, ক্ষেত তৈরী, বীজ উত্তোলন ও চারা রোপনের ধূম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও বোরো চাষাবাদে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি বাম্পার ফলন হতে পারে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন এলাকার কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলা সদরসহ ৫টি উপজেলায় ৮৯ হাজার ৬৫৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৫হাজার ৪৯২ মেট্রিক টন। এ জেলার কৃষকরা যাতে বোরো ফসল আনায়াসে ঘরে তুলতে পারেন সেজন্য সরকারিভাবে নেওয়া হয়েছে পূর্ব প্রস্তুতি। সেই সাথে তেল, বিদ্যুৎ, সার সংকট যেন না হয় সে সম্পর্কেও রয়েছে নজরদারি।
বোরো আবাদ ঘরে তুলতে ৩২ হাজার মেট্র্রিক টন সার ও কীটনাশকের প্রয়োজন থাকায় সেগুলোও মজুদ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার সার্থে বোরো ধানে রোগ-বালাই দমনের লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ।
কৃষকরা জানান, চাষাবাদে সনাতন পদ্ধতির চেয়ে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার লাভজনক। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে বোরো ধানের বীজতলাসহ বিভিন্ন চাষাবাদে শ্রম, সময় আর ব্যয় কম হয়। উৎপাদন হয় বেশি। এ জন্য আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে ঝুঁকে পড়ছেন তারা। এছাড়া তারা কোন কোন এলাকায় সারের চাহিদা মেটাতে কেচো দিয়ে ভার্মিং কম্পোষ্ট সার তৈরির প্রদর্শনীসহ নানা বিষয়ে পরামর্শও পাচ্ছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলা সদরসহ ৫টি উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে স্থানীয় কৃষকরা ক্ষেত তৈরী ও চারা রোপনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে জেলা সদর ও নকলায় ওইসব কাজে কেবল পুরুষ শ্রমিকদের দেখা গেলেও ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা গুলোতে পুরুষদের সাথে এক কাতারে কাজ করছেন আদিবাসী নারীরাও। কোন কোন ক্ষেত্রে তারা একর প্রতি চুক্তি নিয়েও কাজ করছেন।
সীমান্তের বারোমারী এলাকার আদিবাসী নেত্রী বন্দনা চাম্বুগং জানান, চারা উত্তোলন ও রোপনের ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় কর্মক্ষমতা ও দক্ষতাও আদিবাসীর নারী শ্রমিকদের কম নয়।
এ বিষয়ে জেলা খামারবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আশরাফ উদ্দিন বলেন, যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দেয় তবে জেলায় আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।