আমার কথা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে: আবেগাপ্লুত হয়ে প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিনেই শোক প্রস্তাব পাশ করেন শিরীন শারমিন চৌধুরী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফসহ বিগত সংসদ থেকে এ সংসদের মধ্যবর্তী সময়ে যারা মারা গেছেন তাদের জন্য শোক প্রস্তাব উথাপন করা হয়। এর পরে প্রয়াত সৈয়দ আশরাফের উপর আলোচনায় অংশ নেন সাংসদরা। আশরাফের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে প্রথমেই বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তাছাড়া আরও অনেকেই আশরাফের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েন।

এরপর সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জীবন বড় বিচিত্র। আমাদের আপনজন হারিয়ে এই শোক প্রস্তাব করতে হয়। আমি সৈয়দ আশরাফকে ছোটবেলা থেকেই চিনি। আমার পরিবারের সদস্য। কামালের সঙ্গে খুব বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। একসঙ্গে যুদ্ধ করেছে। আমি আমার ছোটবোন বিদেশে ছিলাম। সেসময় আশরাফ আমাদের সঙ্গে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করে। ও আমাকে বড় বোনের মতই জানতো।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বিলেন, ‘৭৫ এর ১৫ আগষ্টের পর যারা আওয়ামী লীগে ছিলেন তারা প্রত্যেকেই একটা দু:সময়ের মধ্যে কাটিয়েছেন। আমিই ৯৬ সালের আশরাফকে দেশে নিয়ে আসি। দেশে এসে রাজনীতি করতে বলি। যখনই তাকে কোন দায়িত্ব দিয়েছি। সে সুনিপুনভাবে তা পালন করেছে। সবসময় পড়াশুনার মধ্যেই থাকতো। আশরাফ এত সহজ সরল ছিল। আমরা যখন লন্ডনে ছিলাম ওকে কল দিয়ে আমাদের বাসায় আসতে বলতাম ভালো রান্না হলে। ও বলতো ট্রেনের তো ভাড়া নেই। তখন বলতাম কোনভাবে ম্যানেজ করে আসো। তারপর দিয়ে দিবো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার বোনকে আমরা নমিনেশন দিয়েছি। আমরা এতটুকু বলবো তার স্মৃতি সবসময়ই আমাদের মাঝে থাকবে। আমরা সবসময় তার কথা মনে রাখবো।’ এদিকে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এই কথা বলতে বারবার থেমে যান। চোখ ছলছল করতে থাকে। আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন। একটা সময় দ্রুত তার বক্তব্য শেষ করেন। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার আমার কথা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, অন্যান্য যাদের শোক প্রস্তাব আসছে তাদের জন্যও শোক প্রকাশ করি।’