উল্লাপাড়ায় জোড়পূর্বক মুক্তিযোদ্বার বাড়ি দখলের অভিযোগ

রায়হান আলী, উল্লাপাড়া সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, জোরপূর্বক দখলের ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দূর্গানগর ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত পরিবারের অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা মরহুম দেলোয়ার হোসেনের এস.এ ৮২৪ আর.এস ১১৭৬ দাগের ৪১ শতক জায়গা দীর্ঘদিন যাবত ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে নিয়ে বসবাস করে আসছে।

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসবাসকৃত সেই ৪১ শতক জায়গায় মধ্যে সোমবার সকালে কবরস্থানের ২৭ শতক জায়গা দাবি করে মধুপুর গ্রামের আব্দুল হাকিম, মজিবুর প্রামানিক, আফসার আলী আসান ও আজাদ আলী গং এর নেতৃত্বে অন্তত ৫০ জন লাঠি ও দেশী অস্ত্র নিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট, গাছ কেটে জায়গা টি দখলের অপচেষ্টা এবং একই সাথে মুক্তিযোদ্ধার কবরের নেমপ্লেট সরিয়ে ফেলেছে।

উল্লেখিত জায়গা টি ১৯৮৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মাসে বড়পাঙ্গাসী গ্রামের মৃত আব্বাস মন্ডলের ছেলে ইউনুস আলী মন্ডলের কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন ক্রয় করে। সেই জমি বিক্রির ৩ মাস পর আব্দুস সালাম নামে এক ব্যক্তি একই বিক্রেতার কাছ থেকে ক্রয় করে। তিনি আবার সেই সম্পত্তি হাসনা খাতুন আন্না নামে এক মহিলা নিকট বিক্রি করেন। হাসনা খাতুন আন্না একই সম্পত্তি মধুপুর কবরস্থানের নামে দানপত্র দলিল করে দেন।

ঘটনা টি ২০০৮ সালে প্রকাশ হওয়ার পর কবরস্থান কমিটি মুক্তিযোদ্ধার নামে ক্রয়কৃত জায়গা টি দখলের জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালায়। মুক্তিযোদ্ধার পরিবার নিজ ভিটেমাটি ছেড়ে না দেওয়ায় তাদের ওপর দলবদ্ধ হয়ে প্রতিনিয়ত নানারকম নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে। বিষয় টি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পরিবার এর প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা করেছে।

মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া সত্বেও তারা জোরপূর্বক মুক্তিযোদ্বার বাড়িটি কবর স্থানের নামে দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ার হোসেনের ছেলে রাসেল অভিযোগ করেন, বাবার শেষ স্মৃতি ক্রয়কৃত ভিটা মাটি ছেড়ে চলে না যাওয়ায় প্রতিনিয়ত আব্দুল হাকিম গং এর নেতৃত্বে নানাভাবে নির্যাতন, নিপীড়ন চালাচ্ছে। এমনকি আমার বাবার কবরের নাম ফলক ভেঙ্গে দিয়েছে তারা।

তিনি আরও জানান, কবরস্থান কমিটি সদস্য আব্দুল হাকিম মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেনের কবরস্থান উচ্ছেদের হুমকি দিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

দূর্গানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আফছার আলীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জানান, এ বিষয়টি তার জানা নেই। এ বিষয়ে স্থানীয়রা তার কাছে কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মধুপুর কবরস্থান কমিটির সদস্য মোঃ মজিবুর রহমান জানান, জায়গাটি কবরস্থানের। সেই জায়গায় যেতে আদালতের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই কবরস্থানের জায়গা দখল নেয়া হচ্ছে, কোন হামলা ভাংচুর করা হয়নি ওদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।