জয়পুরহাটে বাড়ছে মৌচাষ, মধু বিক্রির ন্যায্য মুল্যচায় মৌ চাষীরা

এস.ডি সাগর, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ ১৭ জানুয়ারী জয়পুরহাটে বানিজ্যিকভাবে মৌচাষে ঝুকে পড়ছে ক্ষুদ্র উদ্যোগক্তারা। বেকার যুবক ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা মৌ-চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

জেলার বিভিন্ন গ্রামে বাড়িতে, পাশের জমিতে ও সরিষা ক্ষেতের পাশে প্রায় ৮শ টি বক্সে মৌ-মাছির চাষ হচ্ছে। এখানকার উৎপাদিত মধুর গুনগতমান ভাল হওয়ায় জেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ দেশ-বিদেশের ছোট-বড় কোম্পানী গুলোতে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা জলিল পাড়া গ্রামের শাহজাহান আলী ও তার স্ত্রী নিজের চেষ্টায় ১৯৯৯ সালে বিসিক থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে নিজ বাড়ীতে ৪টি বক্সে প্রথম শুরু করেন মৌ-চাষ। তার দেখাদেখি জেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়েই চলেছে মৌ-চাষ। সদর উপজেলার পুরানা পৈলদস্তপুর, শালগ্রাম জামালপুর, ভাদসা ও মোহাম্মদাবাদসহ জেলার ৫০ থেকে ৬০টি গ্রামে প্রায় ২৫০ জন মৌয়াল মৌচাষে যুক্ত আছে।

এ মৌসুমে প্রতি বক্সে মধু উৎপাদন হয় ৪০ থেকে ৫০ কেজি আর এতে খরচ হয় ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকা। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে মধু উৎপাদন হবে প্রায় ৮০০ থেকে ১০০০ মন। চাষীদের কাছ থেকে খুচরা প্রতি কেজি মধু বিক্রি হচ্ছে ৩শ থেকে ৪শ টাকা।

সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের দস্তপুর গ্রামের মৌচাষী আপেল মাহমুদ, জালাল উদ্দীন, হাফিজুর রহমান ও ভাদসা জলিল পাড়া গ্রামের শাহজাহান আলী জানান, এখানকার উৎপাদিত মধু জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছোট-বড় কোম্পানীতে সরবরাহ হচ্ছে এবং দেশের বাহিরেও চলে যাচ্ছে। তবে মধুর নির্ধারিত বাজার মুল্য না থাকায় ন্যায্যদাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। তাই সরকারীভাবে অথবা কোম্পানীর মাধ্যমে নির্ধারিত দামে মধু কিনলে আরও লাভবান ও আগ্রহী হবেন এখানকার মৌচাষীরা।

মধু সেবন মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী ও ওষুধী গুনাগুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় বাজারে রয়েছে মধুর প্রচুর চাহিদা। মধু কিনতে আসা ক্রেতা রানা হোসেন, মিজানুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলমসহ অনেকেই বলেন, এখানে প্রাকৃতিকভাবে ভেজালমুক্ত মধু স্বল্প দামে কিনতে পেরে আমরা বেশ খুশি।

জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় বলেন, জেলার অনেক জায়গায় সরিষার ক্ষেতের পাশে মৌচাষ হচ্ছে। এর ফলে সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি পরাগায়নের কারণে সরিষার ফলন ভাল হয় এবং মধু উৎপাদনে সহায়ক ভুমিকা পালন করে।

এদিকে জয়পুরহাট বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক মোঃ আকতারুল আলম চৌধুরী বলেন, মৌচাষীদের ঋণ সহায়তা, নিয়মিত প্রশিক্ষন ও প্রায় ৮০০ বক্স সরবরাহ করা হয়েছে।

এ ছাড়াও সরকারের অন্যান্য সহযোগীতা দেওয়া হচ্ছে। এই চাষ করে সহজেই এলাকার যুবক, কৃষক ও স্বল্প আয়ের মানুষেরা প্রচুর লাভবান হচ্ছে।