ঝালকাঠিতে আমনের বাম্পার ফলন, ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কিত কৃষক

জাহিদুল ইসলাম পলাশ, ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠিতে এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল কাটা ও মারাই করতে কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে এলাকার বেকার যুবকরা অটো, অটো রিক্সা ও মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করায় ধান কাটা শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে চরম ভাবে।

আবাহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে বলছে কৃষক। তাইতো তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। আমন ধান চাষ করে এবার লাভবান হবে কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে, ঝালকাঠি জেলা এ বছর ৪৯ হাজার ৯৪১ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। বীজ রোপন থেকে শুরু করে ধান কর্তন পর্যন্ত কোন রকম বৈরি আবাহাওয়া না থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। বিগত বছরে অসময়ের বৃষ্টিসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয় থাকায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে কয়েক হাজার হেক্টর জমির আধাপাকা ধান পঁচে গিয়ে ফলনের বিপর্জয় হয়। কৃষক বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পরেছিল। এ বছর চিত্র ভিন্ন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছর আমন ধানের উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৬ হাজার ১৬৯ মে.টন। এখন পর্যন্ত ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ফসল কাটা হয়েছে। এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল প্রায় এক লক্ষ মে.টন চাল। ফলনও হয়েছে বিগত ১০ বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমান। এই অভুতপূর্ব ফলন দেখে কৃষকরা আশায় বুক বেধেছে।

তবে কৃষকদের দাবি ভাল ফলনের পাশাপাশি তাদের উৎপাদিত ফসলের যেন ন্যায্য মূলে নিশ্চিত করে সরকার। তাহলে কৃষককূল আগ্রহ নিয়ে চাষাবাদ করবে, অর্থনৈতিক ভাবে মুক্ত হবে তারা। আমন ধানের মন (৪০) কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

নলছিটি উপজেলার প্রতাপ গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ বছর আমন ধানের ফলন ভাল হয়েছে। তবে ধানের ন্যায্য মূল্য যেন আমরা পাই সে ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

একই এলাকার কৃষক আব্দুল বারেক খান বলেন,’বর্তমানে শ্রমিকের পারিশ্রমিক অনেক বেশি। ফলস রোপন থেকে শুরু কর্তন পর্যন্ত অনেক টাকা খরচ হয়। ধানের দাম বেশি হলে আমরা বাঁচতে পারি আর কম হলে আমাদের বাঁচার কোন পথ থাকে না। বর্তমানে ধান কাটা শ্রমিক সংকট চরম আকার ধারন করেছে।’

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন, ‘কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এখানকার কৃষকদের বিভিন্ন রকমের পরামর্শ আমরা দিয়েছে। পাশাপাশি আবাহাওয়া ভাল থাকায় এবছর ফলন ভাল হয়েছে।’