নন্দীগ্রামে ইরি-বোরো ধানের চাষাবাদ শুরু

অদ্বৈত কুমার আকাশ, নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার নন্দীগ্রামে শুরু হয়েছে ইরি-বোরো ধানের চাষাবাদ। আমন ধানের দাম ভালো না পাওয়ায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা ইরি-বোরো ধান চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ফলে ইরি-বোরোর মাঠে নেমে পড়েছেন নন্দীগ্রামের কৃষকরা। দিন-রাত জমিতেসেচ দেয়া, জমিতে চাষ দেয়া, বীজতলা থেকে ইরি-বোরো চারা তোলাসহ ধানচাষের নানা কাজে এখন ব্যস্ত তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ২০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে ৭৮ হাজার ৫৮৫ মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এর চেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবার সম্ভবনাও রয়েছে। বিএডিসি (বীজ) কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে রয়েছে বি-৮১, ৬৩, ৫৮ ও ৭৪ জাতের ধান।

এছাড়া রয়েছে মিনিকেট ও হাইব্রিড জাতের ধান। উপজেলার চাকলমা গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদিন জানান, চারা থেকে শুরু করে ডিজেল, বিদ্যুৎ ও সারের কোনো সংকট নেই। এবারে শীত কম ও তীব্রকুয়াশা না থাকায় চারা ভালোভাবেই গজিয়েছে। ফলে চারার সংকট হবে না।

দলগাছা গ্রামের কৃষক মুনিরুজ্জামান মুনির জানান, প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ধানের চারা বাবদ চারশ থেকে পাঁচশ টাকা, জমি চাষ করা আটশ টাকা থেকে হাজার টাকা, দিনমজুর বাবদ এক হাজার টাকা, সার (ইউরিয়া, পটাশ, ডেপ, জিপ) কেনা বাবদ এক হাজার চারশ টাকা খরচ হয়েগেছে।

এ ছাড়া তিন মাস পানি সেচ বাবদ (শ্যালো-ইঞ্জিনে) দুই হাজার টাকা ওডিপ মেশিনে দেড় হাজার টাকা, নিড়ানী ও কিট-নাশকসহ নানা ওষুধ বাবদ আরো প্রায় এক হাজার টাকা ধান কাটা-মাড়াইসহ আরো প্রয়োজন দুই থেকে তিন হাজার টাকা। এ নিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে চাষাবাদ বাবদ সর্বমোট খরচ হবে নয় হাজার থেকে দশ হাজার টাকা।

এই এলাকার বেশির ভাগ কৃষক অন্যর জমি পত্তন নিয়ে চাষবাদ করচ্ছে। তাই বছরের শুরুতেই এক বিঘাজমি ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকায় পত্তন নিতে হয়েছে। উপজেলার পেং গ্রামের কৃষক তাপস সরকার জানান, এ বছর আমন ধানের দামভালো পাইনি আমরা এবার ইরি-বোরো আবাদে নেমে পড়েছি। তবে ইরি-বোরো ধানের লাভ-ক্ষতি নির্ভর করে প্রকৃতির উপর। যদি চলতি মৌসুমে সার, কিটনাশক, ডিজেল, বিদ্যুৎ সঠিক ভাবে পাওয়া যায়, সর্বপরি প্রকৃতি অনূকুলে থাকে তাহলে কৃষক লাভবান হতে পারবে।

উপজেলার রনবাঘ বাজারের সার তেল ব্যবসায়ী দীননাথ প্রসাদ বলেন, এবার পর্যাপ্ত সার তেল আমাদের কাছে মজুদ আছে, তাই কৃষকদের সার, কিটনাশক, ডিজেলের কোন অভাব হবে না।

উপজেলা কৃষি অফিসার মশিদুল হক জানান, ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য একক ওদলীয় আলোচনাসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এবার আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা আছে তা অর্জিত হয়ে আরো বেশি উৎপাদন হবে বলে আশা করছি।

এছাড়া লাইনে ধানের চারা রোপন করার জন্য কৃষকদের দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। লাইনে ধানের চারা রোপন করলে পোকা-মাকড় দমনে অনেকটা সুবিধা হয়।