নরসিংদীতে বিআরটিএ এডি অফিসের মূলকর্মকর্তার দরজায় দালালের টেবিল

সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধিঃ দালাল রাজ্যে পরিণত হয়েছে নরসিংদী বিআরটিএ অফিস। সরকারি এ অফিসের সবধরনের কর্মকর্তা দালাল চক্রদের হাত থেকে নানা কৌশলে টাকা হাসিল করতে বিআরটি এডি অফিসের দরজার মূল ফটকের সামনে দিয়েছে দালাল চক্রের টেবিল। নানা কৌশলে এই টেবিল থেকে দালালরাই নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন এ অফিসের কার্যক্রম। সেখানে গাড়ির লাইসেন্স, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মালিকানা হস্তান্তর, ফিটনেস সার্টিফিকেটসহ যে কোনো কাগজপত্র সম্পাদনের ক্ষেত্রে সরকারি ফিজমা দেওয়ার আগে দালালি কমিশন পরিশোধ করাটাই রেওয়াজে পরিণত হয়ে হয়েছে।

এদিকে এ দালালদের হাতে টাকা না দিলে ও টেবিল থেকে পাশ না হলে মিলে না কোন কার্যক্রম। তেমনি ভুক্তভোগী মনোহরদী উপজেলা থেকে আসা মোঃ শাহিন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, বিআরটি কর্মকর্তাদের নিকট গেলে বলে এ টেবিল থেকে পাশ হয়ে আসছে কিনা তোমার কাগজ। এ টেবিলের মধ্যে কর্মকর্তাদের ঘুষের টাকাও লুকিয়ে থাকে। ঘুষ আর কমিশনের টাকা প্রাপ্তি নিশ্চিত হলেই কেবল সরকারি ফি ব্যাংকে জমাদানের নির্দেশনা পাওয়া যায়।

নরসিংদী বিআরটি এর অফিসের বাইরে নেই দালাল, আছে অফিসের ভিতরে দালাল। এই বিআইপি কার্যালয়ে ঢুকতেই মূল দায়িত্বে থাকা টেবিলের কর্মকর্তার সামনে অধিকাংশ চিহ্নিত দালালকে টেবিলে বসারত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।

এ বিআরটিএ অফিসে সরকারী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছেন ৫ জন। বিআরটিএ অফিসে আগত সেবা প্রার্থীদের গাড়ি এলেই চালকদের তাদের টেবিলে যেতে হয়। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ও কম সময়ের মধ্যেই চাহিদা মাফিক সেবা দেওয়ার নানা প্রতিশ্রুতি দিতে থাকে এই টেবিলের দালালরা।

এসব কাগজপত্রের স্ট্যাপলার পিনে আটকানো খামের ভিতরেই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে কর্মকর্তাদের চাহিদা মাফিক সালামির টাকা। যথারীতি ফাইলিং করে এই টেবিলের দালালদের হাত ধরে কাজ সম্পাদন শেষে পৌছে কর্মকর্তার হাতে। বিগত সময়ে দুদকের একটি টিম এসে হাতে নাতে দালালদের ধরলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও বসিয়েছে এই টেবিল। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না, বদলাচ্ছেনা বিআরটি এর এই টেবিলের দৌরাত্ম্য।

এ বিষয়ে নরসিংদীর মোটরযান পরিদর্শক ও সদস্য সচিব (ডিসিটিবি) এ দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে, তিনি কথাটি এড়িয়ে যান এবং বলেন যে, মাত্র তিন মাস হয়েছে আমি এখানে এসেছি, বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এই বিআরটিতে কাজ করতে আসা প্রতিনিয়ত গ্রাহকরা হয়রানীসহ লাঞ্ছিত হয় বলে অভিযোগ করে বলেন, মোঃ সাহিনুল ইসলাম।