নিজ গ্রামে এসেও বাবা মা কে না পেয়ে ফিরে গেলেন খোদেজা ওরফে শাহেরামা

হাফিজ সেলিম, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ মা-বাবার খোঁজে সুইজারল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আসা খোদেজা রওফিকে নিজের সন্তান বলে দাবী করছেন উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের দড়ি কিশোরপুর শেখের খামার গ্রামের বৃদ্ধা রহিতন বেওয়া (৭৬)।

এ সময় তিনি দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় নিজের সন্তানের ছবি দেখতে পেয়ে হাউ-মাউ করে কেঁদে উঠেন। রহিতন বলেন, খোদেজার নাম ছিল শাহেরা খাতুন। সে ছিল তাদের বড় সন্তান। বড় মেয়ে শাহেরা ওরফে খোদেজা, ছোট মেয়ে সাইবেনি ও ছোট ছেলে রফিকুল ইসলাম।

রহিতন বেওয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার যতটুকু মনে আছে, দেশে দূর্ভেক্ষের পর আমার বড় মেয়ে শাহেরা ওরফে খোদেজা হারিয়ে যায়। শাহেরা ওরফে খোদেজার চোখের নিচে একটি তিলকের চিহ্ন রয়েছে বলে তিনি জানান। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ খবর নিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। এ সময় তিনি কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

রহিতন বেওয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম জানান, আমার বড় বোনের জন্য মা এখনো প্রায় সময় কেঁদেই থাকেন। সে সময় তিস্তা নদী ভাঙ্গনের পূর্বে তাদের বাড়ি ছিল দলদলিয়া ইউনিয়নের অজুর্ন গ্রামে। এরপর পিতা আঃ ছাত্তার প্রায় ২২ বছর পূর্বে মারা যায়। তৎকালীন বসতভিটা তিস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর বর্তমানে তারা থেতরাই ইউনিয়নের দড়িকিশোরপুর শেখের খামার গ্রামে অন্যর জায়গায় বসবাস করে আসছেন।

এছাড়াও তাদেরসেই সময়ের প্রতিবেশি বিবি জান (৭০), জহুরা বেওয়া (৮০), শাহিদা বেগম (৬৫) ওলাইলী বেগম (৬৮), পত্রিকাতে শাহেরা ওরফে খোদেজার শিশু বয়সের ছবি দেখে তাকে হারিয়ে খোদেজা বলে দাবী করেন।

শুক্রবার (২৫ জানুয়ারী) রহিতন বেওয়া ও তার পুত্র রফিকুল ইসলাম শাহেরা ওরফে খোদেজার সাথে দেখা করার জন্য কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের বাসভবনে গিয়ে জানতে পারেন খোদেজা ও তার স্বামী ঢাকায় চলেন গেছেন। এ খবর শুনে রহিতন বাড়িতে ফিরে আসেন এবং মেয়ের জন্য আত্মনাদ করে কাঁদতে থাকেন।

এলাকাবাসী অনেকে জানায়, গত ২২ জানুয়ারী খোদেজা তার নিজ গ্রামে এসে তার পিতার মাতাকে খুজেঁ না পেয়ে চলে যায়। বর্তমানে খোদেজা ও তার স্বামী ঢাকায় রয়েছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছেন।