পাঁচ মিনিটে সংযোগ ঘরে ঘরে বিদ্যূৎ

মোহাম্মদ আমিন, টেকনাফ(কক্সবাজার)প্রতিনিধিঃ চুড়ি-মালা,চমচম, চুলের ফিতা, শিশুদের খেলনা, হাড়ি-পাতিল, শাড়ী কাপড় ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ফেরিওয়ালা গ্রাম গঞ্জে দেখা যায়। এবার আলোর ফেরিওয়ালার সাথে দেখা গ্রামীন প্রত্যন্ত জনপদে।

গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য এখন আর বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে কষ্ট করতে হয় না। “প্রধাণ মন্ত্রীর উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” আলোর ফেরিওয়ালার মাধ্যমে বিদ্যুৎ গিয়ে হাজির হচ্ছে গ্রাহকদের দোর গোড়ায়।

টেকনাফ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যেখানে আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগেও বিদ্যুৎ পাওয়াটা ছিল মানুষের জন্য স্বপ্নের ব্যাপার। দিন রাত ২৪ ঘণ্টায় যে এলাকার মানুষের ভাগ্যে বিদ্যুৎ জুটতো মাত্র ৪/৫ ঘণ্টা, বাসাবাড়ি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুতের লাইন নিতে দিনের পর দিন,মাসের পর মাস এমনকি বছর পেরিয়ে গেলেও মানুষ প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পায়নি।

হাজার হাজার টাকা দিয়েও যেখানে মানুষের কপালে জোটেনি বিদ্যুতের লাইন সেখানে মাত্র ৫ মিনিটে ঘরে বসেই পাচ্ছে বৈদ্যুতিক লাইন। এ যেন সত্যিই স্বপ্ন।যা বাস্তবে রূপ নিয়েছে সীমান্ত শহর টেকনাফ উপজেলার সাধারণ মানুষের ভাগ্যে।বিদ্যূৎ এর যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে রিক্সা যোগে বাড়িতে বাড়িতে হাজির হচ্ছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারীরা। গ্রাহকের আবেদন পেলেই ফি নিয়ে দেওয়া হচ্ছে সংযোগ।

ভ্যান ও রিক্সা গাড়িতে আছে মিটার, বিদ্যুতের তারসহ অন্য সরঞ্জাম। সঙ্গে আছেন দুজন লাইনম্যান ও একজন ওয়ারিং পরিদর্শক। রবিবার ১৩ ই জানুয়ারি সকাল থেকে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন বিদ্যূৎ বিভাগের কর্মচারীরা। গ্রাহকের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাত্র পাঁচ মিনিটেই সংযোগ পেয়ে যাবেন। নেই কোনো হয়রানি, বাড়তি ফি’রও কোন জামেলা নেই। ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আলোর ফেরিওয়ালা। ছাতকে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি রিক্সা।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ভ্যানে ও রিক্সায় মিটার কেবলসহ সব ধরনের সরঞ্জাম থাকছে। দুজন লাইনম্যান ও একজন ওয়্যারিং পরিদর্শক থাকছেন ওই ভ্যান, রিক্সাতে। তাঁরা গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন। যে এলাকার বাসাবাড়িতে এখনো বিদ্যুৎ নেই, সেই এলাকায় বেশি যাচ্ছেন, সেখানে মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন।

যাঁরা নতুন সংযোগ নিতে আগ্রহী, তাঁদের সদস্য ফি ৫০ টাকা, আবেদন ফি ও ভ্যাটসহ ১১৫ টাকা আর জামানত হিসেবে ৪০০ টাকা (বাণিজ্যিক হলে ৮০০) জমা দিতে হচ্ছে। আলোর ফেরিওয়ালাদের কাছে টাকা জমা নেওয়ার রসিদ বই থাকছে, তাঁরা সেখানে বসেই টাকা জমা করছেন। এরপর ওয়্যারিং পরিদর্শক ওয়্যারিং যাচাই করে ঠিক আছে জানালেই সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। গোটা প্রক্রিয়ায় মাত্র পাঁচ–ছয় মিনিট সময় লাগছে।

গ্রাহককে আর উপজেলায় বিদ্যুৎ অফিসে আসতে হচ্ছে না, আবেদনের পাঁচ মিনিটেই সংযোগ পাচ্ছেন। এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুতের লোকজন গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর কারণে পুরোনো গ্রাহকদের কোনো সমস্যা থাকলে সেটাও দ্রুত ঠিক করে নিতে পারছেন তাঁরা। টেকনাফের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম উদয়ণ দাশ গুপ্ত জানান,“বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” তা বাস্তবায়ন করতে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।