প্রচন্ড শীতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে নরসিংদীতে

সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধিঃ নরসিংদীর জেলার চরাঞ্চল সহ পাহারী এলাকায় জেঁকে বসেছে শীত। এই শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। এতে দিন মজুর মানুষরা নিত্য নৈতিক কাজ গুলো ফেলে ঘরে বসে সময় পাড় করছে। বয়স্ক ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

গত এক সপ্তাহে এই জেলায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১২০ জন ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৪৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই মায়ের কোলের শিশু।

সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে নরসিংদী ছয়টি উপজেলায় বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আনুমানিক ১ হাজার থেকে ১৫০০ জন রোগী ভর্তি হয়। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৫২০ জন। তাদের মধ্যে শিশু ও বয়োবৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। গত সাত দিনে (পহেলা জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৫৫ জন এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৭৫ জন।

নরসিংদী জেলার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৭৫ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ জনই শিশু। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত সপ্তাহে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৫ জন রোগী। এর মধ্যে ২৭ জনই শিশু। সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে কর্তব্যরত জ্যেষ্ঠ নার্স শিরিনা পারভিন বলেন, ১০-১২ দিন ধরে শিশু ওয়ার্ডে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।

অন্য সময়ে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যেখানে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ জন শিশু ভর্তি হতো, এখন সেখানে ১০ থেকে ২০ জন করে শিশু ভর্তি হচ্ছে। আক্রান্ত শিশুদের বেশির ভাগই পাঁচ বছরের নিচে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শীতা রানী বলেন, ঠান্ডার কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। তীব্র শীতে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জনিত এসব রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শিশুদের সব সময় গরম পরিবেশে রাখতে হবে। ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য সব সময় গরম খাবার খেতে হবে।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, শীতের সময় মায়েদের সচেতন থাকতে হবে। শিশুদের নরম ও গরম কাপড় পরাতে হবে। কুয়াশা থেকে দূরে রাখতে হবে আর খাবার কুসুম গরম করে খাওয়াতে হবে। তীব্র শীতের কারণে জেলার খেটে খাওয়া মানুষেরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকলেও শীতের মধ্যেই দিনমজুরেরা কাজ করছেন।

দিনমজুর মোঃ সেলিম মিয়া বলেন, ‘আমরা দিনমজুর মানুষ, প্রতিদিনের রোজগার দিয়ে প্রতিদিন চলে। এক দিন না খাটলে আমাদরে সংসারের চাহিদা মোতাবেক খাবার জোটবে না।