বিএনপির ভরাডুবির নেপথ্যে জঙ্গি ইস্যু

আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) সংসদীয় আসনে (জামায়াত-বিএনপির দূর্গ বলে পরিচিত) আওয়ামী লীগের কাছে বিএনপির স্মরণ কালের সর্ববৃহত ভরাডুবি হয়েছে।

আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধূরী নৌকা প্রতিকে ২লাখ ৩হাজার ৪৭৯ভোট পেয়েছেন এবং তার প্রতিদন্দী বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী জঙ্গি নেতা ব্যারিস্টার আমিনুল হক ধানের শীষ প্রতিকে ১লাখ ১৮হাজার ৯৮ভোট পেয়েছেন। এমপি ওমর ফারুক চৌধূরীর নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে জঙ্গি নেতা ব্যারিস্টার আমিনুলের রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটেছে বলে সাধারণ মানুষ মনে করছেন।

তৃণমূলের অভিমত, জঙ্গি ইস্যু, জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসন্ত্রাস ও বির্তকিত প্রার্থী ব্যারিস্টার আমিনুল হক ওরফে জঙ্গিবাবা আমিনুলকে মনোনয়ন দেয়ায় বিএনপির এমন লজ্জাজনক পরাজয় বা ভরাডুবি হয়েছে। অথচ জামায়াত-বিএনপির দূর্গ বলে পরিচিত রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের কাছে বিএনপির লজ্জাজনক এই পরাজয়ে দলটির নীতি নির্ধারক মহল ও নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় দেখা দিয়েছে। বিএনপির দলীয় প্রার্থীর এই লজ্জাজনক পরাজয়কে বিএনপির জনপ্রিয়তার হ্রাস বলে মনে করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, রাজশাহী-১ আসনের শান্তি প্রিয় সাধারণ মানুষ বরাবরই জঙ্গি, অগ্নিসন্ত্রাস ও পেট্রলবোমা বিরোধী অবস্থানে রয়েছে এরা রাজনৈতিক সহাবস্থানে বিশ্বাসী। জঙ্গিবাদের মদ্দদাতা ও জঙ্গি সৃস্টির অভিযোগে ব্যারিস্টার আমিনুল হক অনেক আগেই জন বিচ্ছন্ন হয়ে চরম ইমেজ সংকটে পড়ে এর পরেও এমন বির্তকিত ব্যক্তি বিএনপি দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় বিএনপির তৃণমূল তার ওপর থেকে মূখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এসব মানুষের আশঙ্কা জঙ্গির জন্ম দাতা ব্যারিস্টার আমিনুল হক নির্বাচিত হলে এলাকায় ফের জঙ্গি উঙ্খান হবে সেই আশঙ্কা থেকেই তারা ব্যারিস্টারের পরাজয় ঘটাতে নির্বাচনের মাঠে কাজ করেছে। এমনকি বিএনপির অনেক দায়িত্বশীল নেতাও জঙ্গি আবির্ভাব ঠেকাতে তাদের অনুগতদের নিয়ে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিকে ভোটপ্রদান করেছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, বিএনপির এমন ভরাডুবির নেপথ্যে রয়েছে ব্যারিস্টার আমিনুল হক ওরফে জঙ্গিবাবা আমিনুলের চরম ইমেজ সংকট, বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস ও জ্বালাও-পোড়াও, নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিযোগীতার নামে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, সিনিয়র নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ এবং কমিটি গঠনে ব্যারিস্টার আমিনুল ও তানোর পৌর মেয়র মিজানুর রহমান ওরফে বোমা মিজানের অবৈধ হস্তক্ষেপ নিয়ে বিএনপির তৃণমূলে সৃস্ট কোন্দল মতবিরোধের কারণে বিএনপির এমন ভরাডুবি হয়েছে। এসব নেতাকর্মীদের অভিযোগের তীর ব্যারিস্টার আমিনুল হক ওমিজানুর রহমান মিজানের দিকেই উঠেছে।

ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও মিজানুর রহমান মিজান কমিটি গঠনের নামে এলাকার হোমড়া-চোমড়া, চাঁদাবাজ, টাউট-বাটপার ও সক্রিয় শিবির কর্মীদের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে সাধারণ মানুষের কাছে বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে পরিচিত করেছে যেটা বিএনপির আদর্শিক নেতাকর্মীরা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারেনি যার ফলশ্রুতিতে বিএনপির এমন লজ্জাজনক ভরাডুবি হয়েছে।

আবার অনেকে বলছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা ভোটারদের কাছে ভোটপ্রার্থনা না করেই শুরু থেকেই নির্বাচন ভুন্ডুলের পরিকল্পনা করে আসছে যেটা সাধারণ মানুষ কোনো ভাবেই মেনেনিতে পারেনি। আর নির্বাচনের শুরু থেকেই ভোটের মাঠে ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও মিজানুর রহমান মিজানের গাছাড়া ভাব আলোচনায় ছিল।

এদিকে আওয়ামী লীগের দাবি জামায়াত-বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, জঙ্গিবাদ, জ্বালাও-পোড়াও-পেট্রলবোমা, অগ্নিসন্ত্রাস, হামলা ও নাশকতার কারণে জামায়াত-বিএনপির ওপর থেকে সাধারণ মানুষ মূখ ফিরিয়ে নেয়ায় বিএনপির এমন লজ্জাজনক ভরাডুবি হয়েছে। এব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও বিএনপির দায়িত্বশীল কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।