বেনাপোল বন্দরে এসিড ও ভারী পন্য রাখায়, আসপাশে বসবাস রত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে

মহসিন মিলন, বেনাপোল প্রতিনিধিঃ বেনাপোল বন্দরের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালে এসিড ও ভারী পন্য রাখায় বন্দরের আসপাশে বসবাস রত কয়েক হাজার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

এসিডের বিক্রিয়ায় বাড়ী ঘর ধ্বসে পড়ার আশংকা করছেন ভুক্তভোগী মানুষ। দীর্ঘদিন এলাকার মানুষ বিষয়টি অভিযোগ আকারে বন্দর কর্তৃপক্ষকে জনালেও কোন কাজ হয়নি। মোছা: শেলী, মোছা: মাবিয়া খাতুন, মমতাজ বেগম, আফজাল হোসেন, বদরুল আলম সহ অসংখ্য মানুষ এসিডের বিক্রিয়া ও শব্দ দূষণ রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছেন।

বন্দরের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালের গা ঘেষে বসবাসকারী বদরুল আলম ও আব্দুল জব্বার জানান, বন্দরের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালে ভারতীয় পন্য বোঝাই ট্রাক রাখার কথা থাকলেও সেখানে নিয়ম বহির্ভূতভাবে রাখা হচ্ছে আমদানিকতৃ এসিড ও ভারী লৌহ জাতীয় দ্রব্য। সেখানে ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের জন্য নির্মান করা হয়েছে বাথরুম।

বাথরুম করা হলেও ড্রেনের মধ্যে প্রকাশ্যে পায়খানা ও প্রস্রাব করছে ড্রাইভাররা। ফলে বৃস্টির পানির সাথে মল মুত্র ও এসিড গিয়ে পাশ্ববর্তী বাড়িঘরে ঢুকে পড়ে নস্ট হচ্ছে পরিবেশ। ট্রাক টার্মিনালে পন্য রাখায় রাত দিন চব্বিশ ঘন্টা ভারী পণ্য সহ এসিড জাতীয় পন্য লোড আনলোড করা হচ্ছে। রাতে বিকট শব্দে বন্দরের পাশ্ববর্তী লোকজন নির্ঘুমে রাত কাটাচ্ছে।

বিশেষ করে বড় বড় ৪০/৫০ টনের আমদানিকৃত সিআর কয়েল ও বোল্ডার আনলোডের সময় বিকট শব্দে ভুকম্পন দেখা দেয়। ফলে বৃদ্ধ, রোগী ও শিশুরা আতংকে রাত কাটায়। অনেক সময় ট্রার্মিনালের অভ্যন্তরেই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। তখন এলাকাবাসী বাড়িঘর ছেড়ে চলে যায় নিরাপদ আশ্রয়ে।

বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রাচীর দিয়ে গোটা এলাকাবাসীকে ঘিরে ফেলা হয়েছে। দীর্ঘদিন দাবি করেও কোন ফল হয়নি তাদের। ফলে কয়েক হাজার পরিবার মানবেতন জীবন যাপন করছেন। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে গত ২০১৪ সালের ২ ডিসেম্বর বেনাপোল পৌর সভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন ও বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী সংগঠন সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সহ ১৯৪ টি পরিবার স্বাক্ষরিত একটি আবেদন করা হয় বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে।

বিষয়টি বিবেচনায় এনে ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী বন্দরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র স্বাক্ষরিত বন্দরের পাশ্ববর্তী ৯.৫৬ একর জমি অধিগ্রহনের জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সুপারিশপত্র প্রেরন করেন।

সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারী এলাকাবাসী বেনাপোল বন্দরের উপ পরিচালক আ: জলিলের সাথে মানবিক বিষয়টি তুলে ধরে সমাধান চাইলে তিনি বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সব সমস্যা সমাধান করা হবে বলে আশ্বস্থ করেন। কিন্তু অদ্যবধি এর কোন সুরাহ হয়নি। ফলে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ ও উওেজনা বিরাজ করছে।

বেনাপোল বন্দরের উপ পরিচালক আ: জলিল জানান, বিষয়টি মানবিক বিবেচনা করে বন্দরের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি অচিরেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ভুক্তভোগীরা মানবিক বিষয়ি বিবেচনায় এনে তা দ্রুত সমাধানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জরুরী হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।