মেঘনায় ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ রহমত আলীর এখনো সন্ধান মেলে নি

রায়হান আলী, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ মুন্সিগঞ্জে মেঘনা নদীতে ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার গজাইল গ্রামের দিনমজুর রহমত আলী সরকার। রহমত আলীর পরিবারে এখন চলছে শোকের মাতম।

শিশু ছেলে রাকিবুল কেবলই বলছে, ‘তোমরা আমার বাবাকে আইনা দাও’। এই শিশুর কান্নায় বাড়ির পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। রহমতের ভাই মুন্সিগঞ্জে মেঘনা নদী তীরে দু’দিন ধরে খুঁজে ফিরছে রহমতের লাশ। মঙ্গলবার এই নদীতে তেলবাহী ট্যাংকারের ধাক্কায় একটি ট্রলার ডুবে যায়।

এতে ২০ জন শ্রমিক নিঁখোজ হন। ১৪ জন সাঁতরিয়ে তীরে উঠতে পারলেও বাকীদের কোন খোঁজ মেলেনি এখনো। এদের মধ্যে উল্লাপাড়ার রহমত আলী রয়েছেন। রহমত ওই গ্রামের মৃত- ময়েজ উদ্দিন সরকার এর ছেলে। তার স্ত্রী ও ১০ বছরের একটি ছেলে রয়েছে।

শুক্রবার রহমত আলীর বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় তার মা মনোয়ারা খাতুন বাড়ির উঠানে নাতি শিশু রাকিবুলকে নিয়ে ছেলের জন্য আহাজারি করছেন। প্রতিবেশী মহিলারা সান্তনা দেবার চেষ্টা করছেন তাকে। শোকের গভীরতায় কোন কথাই তিনি বলতে পারেননি মনোয়ারা।

প্রতিবেশী সাইফুল ইসলাম বাবলু জানান, রহমতের স্ত্রী অসুস্থতা জনিত কারণে বেশ কয়েকদিন হলো পাবনার ভাঙ্গুড়ায় তার বাপের বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।

গত শনিবার রহমত আলী বাড়ি থেকে মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশে বেরিয়ে যান। রহমতের ছোট ভাই সোহেল রানা দূর্ঘটনার পর মুন্সিগঞ্জে ভাইয়ের খোঁজে চলে গেছেন। শুক্রবার বেলা সোয় ৫ টায় এই প্রতিবেদন পাঠানো পর্যন্ত রহমতের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। সোহেল রানা ভাইয়ের খোঁজে ঐ এলাকায় এখনও অপেক্ষা করছেন।

সাইফুল ইসলাম আরও জানান, মাঝে মাঝে রহমত ট্রলারে কাজ করেন। আবার কখনও বাড়ি ফিরে স্থানীয় ফসলী জমিতে দিন মজুরের কাজ করে থাকেন। এভাবেই চলে তার সংসার।

উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান কউশিক আহমেদ জানান, পুলিশ এ ব্যাপারে সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর রাখছে। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুজ্জামানও রহমত আলীর বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। তিনি দুঃস্থ রহমত আলীর পরিবারকে সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন।