শেরপুরে ১২ প্রার্থীর মধ্যে ৯ জনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর প্রতিনিধি: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুরের ৩টি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিপুল ভোটাধিক্যে নির্বাচিত হওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী ১২ প্রার্থীর মধ্যে ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত বিএনপির ৩প্রার্থীসহ অপর ৯ জনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, নির্বাচনে পড়া মোট ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগ না পাওয়ায় ওই প্রার্থীদের জামানত স্বয়ংক্রিয় ভাবে বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়।

মঙ্গলবার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, শেরপুর-১ (সদর) আসনে ১৪০টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ৩ লক্ষ ৬১হাজার ৩৭৮ জন। এর মধ্যে ৬হাজার ৩৪৩ ভোটের দু’টি কেন্দ্র স্থগিত হলেও বাকি ১৩৮টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৩লক্ষ ১৯হাজার ৬৩৫ টি। এর মধ্যে ২হাজার ৮৫৮ ভোট বাতিল হলেও বৈধ ভোট ছিল ৩লক্ষ ১৬হাজার ৭৭৭টি।

অন্যদিকে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৫ প্রার্থীর মধ্যে বিজয়ী আওয়ামী লীগপ্রার্থী হুইপ আতিউর রহমান আতিকের নৌকা প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ছিল ২লক্ষ ৮৭হাজার ৪৫২। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত বিএনপি প্রার্থী ডাঃ সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ২৭হাজার ৬৪৩ ভোট। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী এডভোকেট মতিউর রহমান হাতপাখা প্রতীকে ৮৪৪ ভোট, সিপিবি প্রার্থী আফিল শেখ কাস্তে প্রতীকে ৪৭০ ভোট ও শেষ পর্যায়ে নীরব হয়ে যাওয়া জাতীয় পার্টির উন্মুক্ত প্রার্থী ইলিয়াস উদ্দিন লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬৮ ভোট। এ হিসেবে এ আসনে বিজয়ী প্রার্থী ব্যতীত প্রতিদ্বন্দ্বী অপর ৪ প্রার্থীর ভোট মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগের কম হওয়ায় তাদের সকলেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়।

শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনে ১৩৯টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ৩লক্ষ ৪৯ হাজার ১৫৮ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ৩লক্ষ ১২হাজার ৮৪৩ টি। এরমধ্যে ১হাজার ৭৩১ ভোট বাতিল হলেও বৈধ ভোট ছিল ৩লক্ষ ১১হাজার ১১২টি। অন্যদিকে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৩ প্রার্থীর মধ্যে বিজয়ী আওয়ামী লীগপ্রার্থী কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর নৌকা প্রতীকে প্রাপ্ত ভোটছিল ৩লক্ষ ৪৪২। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত বিএনপি প্রার্থী প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ৭হাজার ৬৫৮ ভোট এবং অপর প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী নুরুল ইসলাম হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৩হাজার ১৮ ভোট। এ হিসেবে এআসনে বিজয়ী প্রার্থী ব্যতীত প্রতিদ্বন্দ্বী অপর ২ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়।

শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনে ১২০টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ৩লক্ষ ২৫হাজার ৫২০ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ২লক্ষ ৭২হাজার ৪৮০ টি। এরমধ্যে ১হাজার ৩৮৭ ভোট বাতিল হলেও বৈধ ভোট ছিল ২লক্ষ ৭১হাজার ৯৩টি। অন্যদিকে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৪ প্রার্থীর মধ্যে বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক চাঁনের নৌকা প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ছিল ২লক্ষ ৫১হাজার ৯৩৬। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত বিএনপি প্রার্থী মাহমুদুল হক রুবেল ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ১২হাজার ৪৯১ ভোট।

এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আব্দুস সাত্তার হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৫হাজার ৩৪৮ ভোট ও অপর প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির উন্মুক্ত প্রার্থী আবু নাছের বাদল লাঙল পেয়েছেন ১হাজার ৩১৮ ভোট। এ হিসেবে এ আসনে বিজয়ী প্রার্থী ব্যতীত প্রতিদ্বন্দ্বী অপর ৩ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়।