সংরক্ষিত আসন নিয়ে সরগরম পাহাড়

আল-মামুন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন নিয়ে মহিলা সংরক্ষিত আসন নিয়ে আলোচনায় খাগড়াছড়িতে ৬ মহিলা আওয়ামীলীগের পদ প্রত্যাশীদের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

আওয়ামীলীগের নৌকা মনোনয়ন নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনায় এসেছে খাগড়াছড়ির রাজনৈতিক অঙ্গনের পরিচিত মূখেরা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নতুন সরকার গঠনের পর এখন পাহাড়ে আলোচনার শীর্ষে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য পদ। সংসদের নির্বাচিত দলগুলো ইতোমধ্যে নারী আসনের সংসদ সদস্যদের মনোনয়নপত্র নিতে নারী এমপি’র বিষয়টি বর্তমানে তিন পার্বত্য জেলায় ‘টক অব দ্যা টাউনে’ পরিণত হয়েছে।

সর্বত্র একটাই প্রশ্ন অবশেষে কে হচ্ছেন পাহাড়ের ভাগ্যবতী নারী এমপি। বিশেষ করে একাদশ জাতীয় সংসদে তিন পার্বত্য জেলা থেকে নারী নেতৃত্ব চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। সারাদেশে সংরক্ষিত আসনের জন্য ৫০ ভাগের একভাগে তিন পার্বত্য জেলা রয়েছে। এই চারটি জেলা নিয়ে পার্বত্যাঞ্চলের সংরক্ষিত নারী আসন।

যেহেতু দলীয় বাছাই কমিটির বদান্যতা আর দলীয় প্রধান বা প্রধানমন্ত্রীর নেক নজরের উপর এই এমপিদের ভাগ্য নির্ভরশীল, তাই এই আসনে এবার কে হচ্ছেন ভাগ্যবতী সংসদ সদস্য তা নিয়ে শেষ নেই জল্পনা-কল্পনার।

ইতিমধ্যে যাদের খাগড়াছড়ি জেলাজুড়ে সংরক্ষিত আসনে এমপি প্রার্থী হিসেবে-খাগড়াছড়ি জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ক্রইসাউ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা মহিলালীগের সাধারণ সম্পাদিকা শাহিনা আক্তার, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামীলীগের সদস্য বাসন্তি চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নিগার সুলতানা, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শতরূপা চাকমা ও রাঙামাটির আওয়ামী লীগের জেলা মহিলা সম্পাদিকা ফিরোজা বেগম চিনু আলোচনায় রয়েছে।

প্রার্থীরা নৌকার প্রতিক পেয়ে বিজয়ী হলে পার্বত্য জেলায় নারী উন্নয়ন, শিক্ষারপ্রসার, আত্ম সামাজিক উন্নয়ন থেকে শুরু সকল ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে পাহাড়ে আওয়ামীলীগের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

স্থানীয়দের দাবী, আওয়ামীলীগের গত বার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে রাঙ্গামাটির ফিরোজা বেগম চিনুকে সংরক্ষিত আসনে এমপি করা হয়েছে। আর এবার ৩ পার্বত্য জেলায় উপজাতীয় এমপির পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিত্ব করতে খাগড়াছড়ি থেকে দেওয়া হোক মহিলা সংরক্ষিত আসনের এমপি।

২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বান্দরবান জেলা থেকে ম্যা ম্যা চিং মার্মাকে সংরক্ষিত এমপি নির্বাচন করা হয়। সে অনুযায়ী পার্বত্যবাসীর প্রত্যাশা এবার আওয়ামী লীগ পাহাড়ের নারী নেত্রীদের মূল্যায়ন করবে।

দলীয় নেতা কর্মীদের এমন প্রত্যাশায় তিন পার্বত্য জেলায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ০৭ জন নারী নেত্রী এই পদের প্রত্যাশী বলে জানা গেছে। তার মধ্যে ৬ জন খাগড়াছড়ির এবং অপর একজন রাঙ্গামাটির সংরক্ষিত আসনের এমপি ফিরোজা বেগম চিনু। তবে আওয়ামী লীগ থেকে সংরক্ষিত আসনে এমপি পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় মহিলালীগের সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা মহিলালীগের সাধারণ সম্পাদিক শাহিনা আক্তার, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সদস্য বাসন্তি চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিক শতরূপা চাকমা ও রাঙামাটির আওয়ামী লীগের জেলা মহিলা সম্পাদিকা ফিরোজা বেগম চিনু টপ লিষ্টে রয়েছে বলে জানা গেছে।

খাগড়াছড়ির শতরূপা চাকমা বলেন, দলের দুঃসময়ে আমি কাজ করেছি। খাগড়াছড়িবাসী মানুষ আমাকে চায়। পাহড়ের সকল সম্প্রদায়ের উন্নয়নে কাজ করাসহ নারীদের অগ্রধিকার নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে আমি কাজ করবো।

বাসন্তি চাকমা জানান, তিন পার্বত্য জেলায় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে এই অঞ্চলের নারীরা নানা ক্ষেত্রে বঞ্চিত হয়েছে। এ অঞ্চলের নারী সমাজের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য খাগড়াছড়ি থেকে সংরক্ষিত আসনে নেতৃত্বের দাবি খাগড়াছড়িবাসীর।

রাঙামাটির আওয়ামী লীগের নেত্রী ও মহিলা এমপি ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, আমি দলের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত সৈনিক। আজীবন রাজপথে দলের জন্য কাজ করেছি। পাহাড়ে সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে রয়েছে নিবিড় যোগাযোগ ও সকল বিষয় বিবেচনা করলে আমি আবারও সংরক্ষিত আসনে আবারো এমপি হওয়ার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী।