সড়কে কালভার্ট আছে মাটি নাই জনদুর্ভোগ চরমে দেখার কেউ নেই

আশিস রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রামের একমাত্র প্রধান সড়কের কালভার্টের দুইপাশে মাটি না থাকায় মানুষের চলাচল ও মালামাল পারাপারে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় ভোক্তভোগীরা জানান, রাস্তায় কালভার্ট থাকা স্বত্ত্বেও কালভার্টের দুপাশে মাটি না থাকায় গত বর্ষা মৌসুমে কালভার্টের ওপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে শিশু-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষজনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়েছে।

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে গেলেই যেকোনো পথচারীদের এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। দীর্ঘদিনের এই সমস্যা স্থানীয় জন প্রতিনিধিসহ সচেতন মহলের নজরে পড়লেও আজো অবধি এর কোনো কার্যকরী সমাধান না হওয়ায় হতাশ স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লক্ষীপুর ইউনিয়ন থেকে নূরপুর গামী প্রধান সড়কটি দুই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের জেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। সড়কের নূরপুর গ্রামের অংশের নিকটবর্তী দক্ষিন দিকে নূরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নূরপুর বাজারের অবস্থান এবং উত্তর-পূর্বে মুহিবুর রহমান মানিক সোনালী নূর উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত হওয়ায় এই সড়ক দিয়ে লক্ষীপুর ও সুরমা এই দুই ইউনিয়নের দৈনিক সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের যাতায়াত হয়। সড়কের কালভার্টে মাটি না থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাজারে গাড়ি দিয়ে মালামাল আদান প্রদান করতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, রাস্তার কালভার্টে মাটি না থাকায় মালামাল পরিবহন কষ্ট সাধ্য হয়ে দাড়িয়েছে। শীতকালীন সবজি সাপ্লাই দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ কয়েক মাস যাবৎ সড়কটির বেহাল দশা সম্পর্কে সবাই অবগত আছেন। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় এই রাস্তা দিয়ে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানসহ সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যাতায়াত করেছেন। তারপরেও এই সড়কটির বেহাল দশার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি!

জানা যায়, প্রতিবছর পানি উন্নয়ন বোর্ড এই সড়ক সংস্কারের নামে দায়সারা ভাবে মাটি ভরাটের কাজ করে থাকেন। শুধু কালভার্টের অংশেই নয়, সড়কের জোড়খলা আবোড়া বেড়িবাধ অংশে স্লুইচ গেইট না থাকার ফলে প্রতিবছর-ই বর্ষা মৌসুমে আগাম বন্যায় সড়কটির বিভিন্ন অংশ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। এতে স্থানীয়রা বার বার ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

সড়কের ভাঙন ঠেকাতে মুহিবুর রহমান মানিক সোনালী নূর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে নূরপুর গামী রাস্তাটির পাকাকরণ এবং সড়কের জোড়খলা আবোড়া বেড়িবাধে স্লুইচ গেইট নির্মাণ ও ভাঙন কবলিত অংশ দ্রুত মাটি ভরাটের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলীনূর এবং সাবেক ইউপি সদস্য মাহবুব আহমদ অপু বলেন, ‘মুহিবুর রহমান মানিক সোনালী নূর উচ্চ বিদ্যালয় হতে সোনাপুর গ্রামের পশ্চিম পার্শ্বের কনোর ঢালা পর্যন্ত এবং নন্দীগ্রাম থেকে নূরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটির মাটি ভরাট ও পাকাকরণ এবং জোড়খলা আবোড়া বেড়িবাধ অংশে স্লুইচ গেইট নির্মাণ জরুরি হয়ে দাড়িয়েছে।

বার বার আগাম বন্যায় ভাঙ্গনের কারণে প্রতিবছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়সারা বাধ নির্মাণ কোনো কাজে আসছেনা। এতে প্রতি বছরই আশপাশের এলাকার জনসাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সরকারের বিরাট অঙ্কের অর্থ অপচয় হচ্ছে।