রবিবার ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। এরপরে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটি জরুরি অবতরণ করে। এদিকে উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ ছিনতাই চেষ্টাকারী মাহাদীর ছবি প্রকাশ করেছে প্রশাসন। গতকাল রাতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো অভিযানে তিনি নিহত হন।
এদিকে বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’ উড়োজাহাজ ছিনতাইকারী কথিত মাহাদীর পরিচয় মিলেছে। তার নাম মাহাদি ওরফে মাহমুদ পলাশ (২৪)। এদিকে উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী পলাশের ফেসবুকে সর্বশেষ স্ট্যাটাস ছিল “ঘৃণা নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে”।
গতকাল রবিবার দুপুর ১টা তিন মিনিটে তিনি স্ট্যাটাসটি দেন। ওই দিনই তিনি উড়োজাহাজ ছিনতাই করতে গিয়ে কমান্ডো বাহিনীর হাতে নিহত হন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়। এদিকে পলাশের শেষ স্ট্যাটাস অনুযায়ী মনে হচ্ছে, তিনি কারও ওপর অভিমান করেছিল। তবে কার ওপর এ অভিমান তা উল্লেখ করেননি।
এদিকে পলাশের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নাম মাহিবি জাহান। সেখানে পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ইনফরমেশন টেকনোলজি বিজনেস এনালিস্ট। শিক্ষাগত যোগ্যতা দেওয়া আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। বসবাস করেন যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে। তাছাড়া ফেসবুকে নায়িকা সিমলার সঙ্গে অসংখ্য অন্তরঙ্গ ছবি রয়েছে পলাশের। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তারা বিবাহিত ছিলেন।
এদিকে গত ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে ফেসবুকে সিমলার সঙ্গে তোলা ছবি দিয়ে পলাশ লেখেন, ‘এ হচ্ছে আমার বউ যে আমার হাজার ভুলের মাঝে, আমাকে সহ্য করে পার করে দিল একটি বছর। দোয়া করবেন যাতে সারাটা জীবন এ পাগলিটা আমি এক সাথে থেকে যেন মরতে পারি। বউ অনেক ভালোবাসি তোমায় আর কষ্ট দেব না। শুভ বিবাহবার্ষিকী আদরের পুতুল বউ আমার। আই লাভ ইউ লট মোর দেন মাইসেলফ!’
এদিকে ‘অবাধ্য ছেলে’ উল্লেখ করে বাবা পিয়ার জাহান জানান, পলাশ কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেনি। স্থানীয় তাহেরপুর আলিম মাদ্রাসা থেকে ২০১২ সালে দাখিল পাশ করার পর সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। কিন্তু পড়াশোনা আর এগোয়নি।
এ ব্যাপারে পিয়ার জাহান বলেন, ‘আমি প্রবাসে থেকে যা টাকা পাঠাতাম সে টাকা বিভিন্ন অজুহাতে নিয়ে অপচয় করত। নায়িকা সিমলাকে সঙ্গে নিয়ে সে প্রায় ১০ মাস আগে দু’বার সোনারগাঁয়ে আমার বাড়িতে এসেছিল। দ্বিতীয়বার সিমলা নিজে আমাকে তাদের বিয়ের কথা নিশ্চিত করেছে। আমার স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে সিমলার বেশ কিছুদিন যোগাযোগ ছিল। কিন্তু গত ৬ থেকে ৭ মাস যাবৎ সিমলা মোবাইলে আর যোগাযোগ করে না। আমার ছেলের সঙ্গে বর্তমানে সিমলার সম্পর্ক আছে কিনা তাও আমরা জানি না।’