আর মাত্র ৪৫ দিন বাঁচবেন আসিফ! জানালেন নিজেই

বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। তার জাদুকরি কণ্ঠ আর সুরের মুর্ছনায় মুগ্ধ দেশের লাখো শ্রোতা। সঙ্গীত জীবন শুরু করার পর মাঝে লম্বা বিরতি থাকলেও বেশ কয়েক বছর ধরে নিয়মিত গান প্রকাশ করে যাচ্ছেন তিনি। বলা চলে খুব ভালো সময় কাটছে তার। কিন্তু এবার কি সেই সময়ের ইতি হতে পারে? আসিফ আকবর বাঁচবেন আর মাত্র ৪৫ দিন!

গতকাল নিজের ফেসবুক পেজে স্কুল-কলেজ জীবনের কিছু স্মৃতি উল্লেখ করে আফিফ আকবর একটি স্ট্যাটাস নিয়েছেন। সেখানে এমনই কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছেন এই শিল্পী। তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই পড়াশোনার প্রতি একটা বিতৃষ্ণা ছিলো। জীবনে প্রথম যেদিন স্কুলে যাই সেদিন হাতে ছিলো শুধু মলাট, ভেতরের কাগজগুলো আগেই এ্যারোপ্লেন হয়ে আকাশে উড়ে গিয়েছে। বন্ধু বেলাল আর আমি একসাথেই আওয়ার লেডী অব ফাতিমা গার্লস হাই স্কুলে ভর্তি হই। আজ ওর নামের পাশে ডঃ আর আমি ট্রাক্টর। জিলা স্কুলেও শিক্ষা জীবন কাটিয়ে দিয়েছি এক খাতার উপরে।

দুই হাত খালি, ব্যাক পকেটে খাতা। প্রহারের পর প্রহারেও লক্ষ্যচ্যুত হইনি। স্যার কিংবা আপা তাদের প্রতিদিনের হাতের ব্যায়ামটা আমার উপর সেরে ফেলতেন। কলেজেও একই অবস্থা, শ্রদ্ধেয় প্রফেসর আমীর আলী স্যার একদিকে শুরু করতেন মাইকেলের “সমুদ্রের প্রতি রাবন”- আরেকদিকে আমার বন্ধুরাসহ আমি পগারপার টু ষ্টেডিয়াম। ভিক্টোরিয়া কলেজের ক্রিকেট ক্যাপ্টেন হিসেবে ব্যাপক ছাড় পেয়ে ইন্টার পাশ।

সমস্যা বাঁধলো অনার্সে ভর্তি হয়ে। প্রথমে ইকোনোমিক্স নেয়ার চিন্তা ছিলো, অনেক সার্ভে করার পর লিপষ্টিক সাইন্স, মানে রাজনীতি বিজ্ঞানে ভর্তি হলাম, করে ফেললাম বিয়ে। বেকার বিবাহিতরাই শুধু আমার তৎকালীন সিকোয়েন্সটা বুঝতে পারবেন। যাই হোক,বন্ধু বাবুলের সহযোগীতায় ইকোনো বল পেন এর গায়ে কাটা কম্পাস দিয়ে পয়েন্টগুলো লিখে নিয়ে যেতাম পরীক্ষা হলে।

শীতের কোমল রোদে দুই বন্ধু ছাদে গিয়ে পড়তাম। আম্মা খুব খুশী, তিনি ভেবেই নিয়েছিলেন এবার উনার মেধাবী ছেলেটা পড়াশোনায় মনযোগ দিয়েছে। এটাও বিয়ের পজিটিভ সাইড এফেক্ট হিসেবেই নিয়েছিলেন তিনি। আসলে ইজ্জত বাঁচাতে ছাদে বসে নকল করতাম, হলে পরীক্ষার সময় এতোগুলো কলম দেখে স্যার ভাবতেন উড়াই ফেলবো পরীক্ষা দিয়ে।

পরীক্ষা দিয়ে এসে বউয়ের সাথে ডিসকাস করতাম এবং বলে দিতাম সাতচল্লিশ পাবো । ফার্স্ট সেকেন্ড এবং থার্ড ইয়ারে ছয় পেপারে পেয়েছি সাতচল্লিশ করেই, বাকী দুই পেপারের মার্ক ছিলো বায়ান্ন এবং বিয়াল্লিশ, এ্যাভারেজ টোটাল করলে দাঁড়ায় সাতচল্লিশ। বিবাহিত ছাত্রের অবিবাহিত শিক্ষক শ্রদ্ধেয় মইনুল স্যার বললেন – আমার জীবনে এরকম ধারাবাহিকতা কখনো দেখিনি।

স্যার ছিলেন ব্যাচেলর, তিনি কিভাবে বুঝবেন বিয়ের সাইড এফেক্ট !! সমস্যা অন্য জায়গায়, খুশীতে ঠেলায় তখন বউকে বলেছিলাম, দেইখো আমি সাতচল্লিশ বছরই বাঁচবো কিংবা বাঁচতে চাই।

আর পয়তাল্লিশ দিন পর আমার বয়স হবে সাতচল্লিশ। এই বছর আবার লিপইয়ার ও নাই যে একদিন বেশী বাঁচবো !! কমিটমেন্ট ভাঙ্গার লোক আমি না, বাকী আল্লার ইচ্ছা। বেঁচে থাকলে বিয়ে করবো ইনশাল্লাহ, আর যদি মরে যাই তাহলে পুরনো কথা রিপিট করে গেলাম – লেখাপড়া করে জীবনে কেউ কিছু করতে পারে নাই, তবে জ্ঞ্যন অর্জন করে তা বাটোয়ারা করে যেতে হবে, জ্ঞান কবরে নিয়ে যাওয়ার জিনিস নয়।