কাশ্মীরের ভারতের হামলায় ৩ নারী ও ১ শিশু নিহত

কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে ৪ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বা লাইন অফ কন্ট্রোল বরাবর ভারত আর পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলিতে ভারতীয় গোলার আঘাতে পাকিস্তানের তিনজন নারী ও একটি শিশু মারা গেছে। আর আহত হয়েছেন ১১ জন।

অন্যদিকে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ছোঁড়া গোলায় পাঁচজন ভারতীয় সৈনিকের আহত হওয়ারও খবর পাওয়া গেছে। প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার ভোররাতে পাকিস্তানের আকাশ সীমার প্রায় ৮০ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে ১২টি যুদ্ধ বিমান বোমাবর্ষণ করে জঙ্গী সংগঠন জৈশ-ই-মুহম্মদের একটি প্রশিক্ষণ শিবির ধ্বংস করে দিয়েছে বলে দাবী করেছে ভারত।

এরপর ভারতীয় বিমানবাহিনী যে পাকিস্তানের আকাশসীমার ভেতরে ঢুকে পড়েছিল, তা স্বীকার করলেও পাকিস্তানী বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বিমানবাহিনী পাল্টা ধাওয়া করলে জঙ্গলের ওপরে বোমা ফেলে চলে যায় ভারতীয় বিমানগুলি।

আর এতে কোনও প্রাণহানি হয়নি বলেও দাবী করে পাকিস্তান। ওই ঘটনার পর থেকেই দুই দেশের নিয়ন্ত্রণ রেখার দুপাশে উত্তেজনা শুরু হয়। বেশ কয়েকটি সেক্টরে গোলাগুলি বিনিময় হয়েছে।

কী জানা যাচ্ছে সংঘর্ষের বিষয়ে?

পাকিস্তান থেকে বিবিসি-র সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। ওই এলাকার বেসামরিক নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছাকাছি সব সরকারী স্কুল কলেজ বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান প্রশাসন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে কোটলি সেক্টরে ভারতীয় বাহিনীর ছোঁড়া গোলায় চারজন নিহত হন। এছাড়াও রাওয়াকোট, ভাঁওর, চাকৌতে মেশিনগান থেকে গুলি চালিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। তারা মর্টারও ছোঁড়ে বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান।

অন্যদিকে ভারতও অভিযোগ করছে যে পাকিস্তানই নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করে গুলি চালিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী বলছে, “কাশ্মীরের আখনুর, নৌশেরা সেক্টরগুলিতে কোনও প্ররোচনা ছাড়াই সংঘর্ষ বিরতির চুক্তি ভেঙ্গেছে পাকিস্তান। ভারতীয় সেনাও উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।”

এইসব গোলা বিনিময়ের ঘটনায় ১১ জন ভারতীয় সেনাসদস্য আহত হয়েছে। তাদের সেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভারতের দিকেও পুঞ্চ এবং রাজৌরি জেলায় নিয়ন্ত্রণ রেখার পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় সব স্কুল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া অবধি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

শ্রীনগর থেকে বিবিসি সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, উত্তর কাশ্মীরের উরি সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখার দুদিক থেকেই ব্যাপক গোলাগুলি চলার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আবার সোফিয়ানে সন্দেহভাজন জৈশ-ই-মুহম্মদ সদস্যদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর একটি এনকাউন্টার হয়েছে যাতে দুজন জৈশ জঙ্গী মারা গেছেন।