কেন একাদশে ফর্মহীন খেলোয়াড়?

নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আজ মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ দল। আর সেই ম্যাচে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কিউই বোলারদের তাণ্ডবে মাত্র ২৩২ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ দল।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪৪.৩ ওভারেই জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। এতেই সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল কিউইরা। এদিকে বিপিএল শেষ করে বিশ্রামের সুযোগ পাননি খেলোয়াড়রা। তাড়াহুড়ো করে ধরতে নিউজিল্যান্ডের বিমান। তারওপর সেখানে প্রতিকূল আবহাওয়া।

তাছাড়া প্রস্তুতি ম্যাচও খেলার সুযোগ হয়নি অনেকের। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ তাই মাঠে নামার আগেই ছিলো অনেক পিছিয়ে। বাকিটা মাঠের খেলা দিয়ে পুষিয়ে দেয়ার উপায় অবশ্য ছিলো। কিন্তু সেখানে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। এদিকে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে আগে ব্যাটিং করে ৩০০ রান না করলে ম্যাচে ফাইট দেয়া খুব কঠিন। কিন্তু বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ২৩২ রানে।

এদিকে একাদশে এমন অনেকেই ছিলেন যারা কিছুদিন ধরে ফর্মের বাইরে। সদ্যশেষ হওয়া বিপিএলে যেসব খেলোয়াড় ফ্লপ টিমে জায়গা করে নিয়েছেন তাদের মধ্যে প্রথম সারিতে থাকবেন সৌম্য সরকার। যদিও জতীয় দলে অনেক সুসময় কাটিয়েছেন তিনি। এবারের বিপিএলে প্রথম ৯ ম্যাচ খেলে করেছেন ৮০ রান। আর তাকে নিয়েই দল গঠন করা হয়েছে নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য।

এদিকে সাব্বির রহমান, আরেকটি আলোচিত-সমালোচিত নাম। ফেসবুকে ক্রিকেটপ্রেমীর সঙ্গে খারাপ আচরণের জন্য ছয় মাস তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন মাঠের বাহিরে থাকা, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পূর্বেই তাকে দলে ফেরানো হয়। আর এটি নিয়ে খোদ নিউজিল্যান্ডসহ আন্তার্জাতিক ক্রিড়াঙ্গনে উঠেছে অনেক প্রশ্ন। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। যদিও বিপিএলে অনেক চেষ্টা করেছেন নিজেকে ফর্মে ফেরাতে। কয়েক ম্যাচ ভালোও খেলেছেন। তবুও ধারাবহিক ফর্মে নেই।

অন্যদিকে লিটন দাস ভালো ফর্মে ছিলেন, কিন্তু ধারাবাহিক ফর্ম নেই। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যার ব্যাটিং বোলিং গড় সবার শীর্ষে, সেই সাকিবের ইনজুরি। সাকিবের অভাবটা অপূরণীয় এখনো। অভিজ্ঞ ও জাতীয় দলে ফর্মে থাকা ইমরুলকে না খোলানো কতটা প্রভাব ফেলছে বলা যায়, কারণ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তার।

তাছাড়া দলের মধ্যে যদি একঝাঁক অফফর্মে থাকা অনভিজ্ঞ প্লেয়ার থাকে তবে ফলাফল খুব বেশি ভালো আশা করা কঠিন। লিগ কিংবা বিপিএলে ভালো ফর্মে থাকা কোন কোন খেলোয়াড়কে হয়তো নির্বাচকদের চোখে পড়েনি? তাছাড়া এই ম্যাচে পেস সহায়ক কন্ডিশনেও চার পেসার নিয়ে মাঠে নামেনি বাংলাদেশ। রুবেল হোসেন নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সবসময় সফলতম বোলার ছিলেন। স্কোয়াডে থাকা সত্ত্বেও তার জায়গা হয়নি একাদশে।

তবে সব কিছুর পরেও এই একাদশ নিয়েও আরো দায়িত্বশীলতার সাথে সবাই খেলতে পারলে ম্যাচের ফলাফলটা অন্যরকম হতে পারতো। সিনিয়র খেলোয়ড়দের আরো দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে আগামী ম্যাচগুলোতে। আর তাহলে ভালো কিছুর আশা করাই যায়। বাংলাদেশ টিমের জন্য শুভকামনা যেন বাকী দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়ের স্বাদ গ্রহন করতে পারে।