ফার্মেসীতে ‌যে চারজনের খু‌লি পাওয়া গেছে, তাদের তিনজন এরা

চার বন্ধু মঞ্জু, হীরা, আনোয়ার ও নাসির ব্যবসা করতেন রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারে। নিজেদের কাজ কর্ম শেষে প্রতিদিন রাত ১০টার পর সবাই একসঙ্গে কিছুটা সময় আড্ডা দিতেন, পরে যার যার বাসায় যেতেন।

আর প্রতিদিনের মধ্যে গতকাল রাতেও আড্ডা দিয়েছেন তবে বাসায় ফেরা হয়নি কারো। সেই আড্ডার মধ্যেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তারা।

এদিকে চকবাজারে পারিবারিক ওষুধের ব্যবসা ছিল মঞ্জুর। ছুড়িহাট্টা জামে মসজিদের পাশে ওষুধের দোকান ‘হায়দার মেডিকো’। পাশেই ইমিটেশন গহনার ব্যবসা বন্ধু হীরার, ব্যাগের ব্যবসা ছিল আনোয়ারের। আর নাসিরের ছিল প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবসা।

আর প্রতিদিন কাজ শেষে হায়দার মেডিকোতে এসে বসতেন তারা। একসঙ্গে কিছু সময় গল্প-গুজব করে নিজ নিজ রুমে ফিরে যেতেন। কিন্তু বুধবার রাতে আর নিজ ঘরে ফেলা হলো না নোয়াখালীর চার বন্ধুর। চকবাজারের ভয়াবহ আগুন কেড়ে নিয়েছে তাদের সব গল্প আর স্বপ্ন। চিহ্ন হিসেবে রেখে গেছে পোড়া চারটি মাথার খুলি।

এ ব্যাপারে মঞ্জুর ভাই লিটন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিকেলেই ভাইয়ের সঙ্গে শেষ দেখা হয়। প্রতি রাতে চার বন্ধু মিলে ফার্মাসিতে আড্ডা দিত। বুধবারও তারা আড্ডায় মিলিত হয়। আগুন লাগার পর তাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাত ৩টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে হায়দার মেডিকোর ভেতরে পাওয়া যায় পোড়া চারটি মাথার খুলি। যেহেতু তারা প্রতি রাতে এখানে আড্ডা দিত, সেহেতু চারটি খুলিই বলে দিচ্ছে, এটা তাদের।’

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে লিটন আরও বলেন, ‘তাদের ফার্মেসির সামনেই একটি গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। এ সময় আতঙ্কিত লোকজন যখন ছুটোছুটি শুরু করে তখন বিস্ফোরণ থেকে বাঁচতে মঞ্জু ও তার তিন বন্ধু দোকানের ভেতর ঢুকে শাটার লাগিয়ে দেয়। এরপর যখন আগুনের ভয়াবহতা বেড়ে যায় তখন আর তারা সেখান থেকে বের হতে পারেনি।’