বাংলাদেশে গৃহহীন ও গরিব থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের খনন কাজ ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন ও গরিব থাকবে না। সকল গৃহহীনদের ঘরবাড়ির ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ অদম্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে বলেই দেশের এত উন্নয়ন আমরা করতে পেরেছি। জনগণ আমাদের পাশে আছে বলে এত কাজ আমরা করতে পেরেছি। জনগণ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট হয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের একটি নিরঙ্কুশ বিজয় উপহার দিয়েছে। আমরা জনগণের দেয়া প্রতিটি ওয়াদার পূর্ণ বাস্তবায়ন করব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখব। সকলের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করব। দেশে কেউ গৃহহীন ও গরীব থাকবে না। গৃহহীনদের ঘরবাড়ির ব্যবস্থা আমরা করে দেব। অচিরেই দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। মহেশখালী ও মাতারবাড়ী অঞ্চলে একটি এবং পায়রাতে একটি করে এনার্জি হাব গড়ে তোলা হবে।’

‘বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের অধিকতর কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। দেশে বুলেট ট্রেন চালু করা হবে। আমরা ইতোমধ্যে ব্লু-ইকোনমি বা সমুদ্র সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করব।’

এ সময় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্প হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নদীর নীচে প্রথম চ্যানেল নির্মাণ প্রকল্প উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০১০ সালে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম। তার ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের জুন মাসে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে একটি সড়ক টানেল নির্মাণের জন্য চীন সরকারের সাথে জি টু জি ভিত্তিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।’

‘সেই স্মারকের ধারাবাহিকতায় চীন সরকার চ্যানেল নির্মাণের জন্য চীনা একটি কোম্পানিকে মনোনয়ন দেয়। ২০১৫ সালের ৩০ জুন টানেল নির্মাণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সাথে চীনের এই কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর এই টানেল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে মূল টানেলটি দু’টি টিউব সম্বলিত ও ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোড এবং ৭২৭ মিটার ওভার ব্রিজসহ এই টানেলটি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলাকে শহরাঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।’

‘প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৯ হাজার ৮৮০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ সহায়তায় ৩ হাজার ৯৬৭ কোটি ২১ লাখ টাকা ও চীন সরকারের ৫ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা রয়েছে। বর্তমানে টানেল প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে চলেছে। এর বাস্তব ভৌত অগ্রগতি ৩২ শতাংশ।’

তাছাড়া আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশের প্রথম টানেল নির্মাণের কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।’