ভাবিকে না পেয়ে ভাতিজীকে হত্যা

অবশেষে জানা গেল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাঞ্চল্যকর শিশু হালিমা হত্যাকাণ্ডের ‘রহস্য’। দুই মাস আগে ছোট্ট শিশু হালিমার মা খাদিজা বেগমকে কুপ্রস্তাব দেয় তারই বখাটে দেবর হেলাল মিয়া। হেলাল মিয়ার অনৈতিক প্রস্তাবের প্রতিবাদ করায় এর প্রতিশোধ নিতেই শিশুটিকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সাংবাদিকদের কাছে এমন তথ্য তুলে ধরে পুলিশ জানায়, হালিমার মা খাদিজা বেগম তার দেবর (শিশুটির চাচা) হেলাল মিয়া অনৈতিক প্রস্তাবের প্রতিবাদ করায় এর প্রতিশোধ নিতেই শিশুটিকে হত্যা করা হয়। পূর্বপরিকল্পিতভাবে তিনি শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তার আপন ভাতিজি আড়াই বছর বয়সের হালিমা খাতুনকে। এ ঘটনায় হেলাল মিয়া ও তার সহযোগী রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় করে এ তথ্য তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন।

তিনি জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি শহরের ভাদুঘর এলাকা থেকে রাজমিস্ত্রি আমির হোসেনের ৩ বছরের মেয়ে হালিমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর পুলিশের একাধিক টিম তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে হালিমার চাচা হেলাল মিয়াকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে হেলাল জানান, বেশ কিছু দিন আগে তিনি হালিমার মা খাদিজাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় এবং পারিবারিক কলহের জের ধরে এক মাস আগে তিনি ভাতিজি হালিমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন সকালে তিনি কৌশলে হালিমাকে চিপস দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরে সহযোগী রুবেলের সহায়তায় শিশুটিকে হত্যা করে দু’টি বহুতল ভবনের মাঝখানে ফেলে আসেন। পরে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

এর আগে গত কয়েকদিন আগে হালিমাকে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। কিন্তু পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয় বলে জানায় হেলাল।

শনিবার দুপুরে জেলা শহরের ভাদুঘর ভূঁইয়াপাড়া এলাকার বাড়ির পাশ থেকে হালিমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে একই এলাকার আমির হোসেনের মেয়ে। এ ঘটনায় হালিমার আপন চাচা হেলাল মিয়া ও তার সহযোগী রুবেল মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) আবু সাঈদ, সদর মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জিয়াউল হক উপস্থিত ছিলেন।